ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী চার্লি কির্কের খুনি টাইলার রবিনসনকে শুক্রবারই গ্রেফতার করেছে সে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। ২২ বছর বয়সি ওই যুবককে জেরা করে চেষ্টা চলছে হত্যার ‘কারণ’ (মোটিভ) অনুসন্ধানের। মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে এফবিআই জানিয়েছে, রক্ষণশীল চার্লিকে খুনের কারণ জানাতে গিয়ে রবিনসন বলেছেন, ‘‘উনি ঘৃণা ছড়াতেন।’’
ইতিমধ্যেই মোবাইল ফোনে কথোপকথনের সূত্র ধরেও বেশ কিছু তথ্যের সন্ধান পেয়েছেন তদন্তকারীরা। গভর্নর স্পেন্সার কক্স বলেন, ‘‘বেশ কিছু দিন ধরেই খুনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ধৃত ব্যক্তি। পরিবারের অন্য সদস্যের সঙ্গে কথোপকথনে, রবিনসন উল্লেখ করেছিলেন যে চার্লি ১০ সেপ্টেম্বর (বুধবার) ইউটা ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসছেন। সে সময়ও চার্লির বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর কথা বলেছিলেন তিনি।’’ প্রসঙ্গত, বুধবার আমেরিকার ইউটা ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন ৩১ বছরের চার্লি।
সম্প্রতি আমেরিকার কলোরাডো থেকে ভার্জিনিয়া পর্যন্ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সফর করার পরিকল্পনা করেছিলেন নিহত রক্ষণশীল নেতা। নাম দিয়েছিলেন, ‘দ্য আমেরিকান কামব্যাক ট্যুর’।
ওই সফরসূচির অংশ ছিল ইউটার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্রুভ মি রং’ শীর্ষক আলোচনাসভায় যোগদান। সেখানে সমবেত পড়ুয়াদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন চার্লি। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বরে লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা যায়, চার্লির সভাস্থলের অদূরে একটি ভবনের ছাদে লুকিয়ে ছিলেন রবিনসন। সামরিক কায়দায় মাটিতে শুয়ে টেলিস্কোপ-যুক্ত স্নাইপার রাইফেলের সাহায্যে যে ভাবে তিনি নিখুঁত নিশানায় প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছেন, তাতে ‘প্রশিক্ষণ এবং প্রস্তুতির ছায়া’ দেখছেন তদন্তকারীরা।
কক্স শুক্রবার জানিয়েছেন, রবিনসন যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ‘ডিসকর্ড’ মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করেছিলেন। খুনের পর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঝোপের মধ্যে স্নাইপার রাইফেলটি (যেটি বৃহস্পতিবার তদন্তকারীরা উদ্ধার করেছিলেন) লুকিয়ে রেখেছিলেন এবং গ্রেফতারি এড়াতে পোশাক পরিবর্তন করেছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুক্রবার জানিয়েছেন, রবিনসনের ‘ঘনিষ্ঠ’ এক জনই তাঁকে ধরিয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, চার্লিকে খুনের পর নিজের বাবার কাছে গিয়েছিলেন ঘাতক। তিনি আমেরিকার মার্শালের কাছে যান। ট্রাম্পের কথায়, ‘‘পুত্রকে বুঝিয়েছেন বাবা। আমি যা শুনেছি, তা-ই বললাম।’’ সেই সঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন আমেরিকার আইন অনুযায়ী আদালতে মৃত্যুদণ্ডের সাজা হবে রবিনসনের।