‘সইয়ারা’ ছবির অভিনেতা অহান পাণ্ডে এবং মূল চরিত্র কৃষ কপূরের মধ্যে বিস্তর ফারাক। আর সেই চরিত্রে র জুতোয় পা গলানোর জন্য অহানকে দেড় মাসের মধ্যে দেহের কাঠামো থেকে ওজন একেবারে পাল্টে ফেলতে হয়েছিল। মাত্র ৪০–৪৫ দিনে তাঁকে ৮–৯ কেজি ওজন কমিয়ে গড়ে তুলতে হয়েছিল নিখুঁত ‘সিক্স প্যাক্স’।
ছবির শুটিং শুরু হওয়ার সময়ে তাঁর ওজন খানিক বেশি ছিল। কিন্তু কৃষের চেহারার দাবি ছিল অন্য। পেশিবহুল, মজবুত। কী ভাবে তা হলে এত কম সময়ের মধ্যে লক্ষ্যে পৌঁছোলেন অহান? অভিনেতার প্রশিক্ষক অজ়হার জ়াহির শেখ বিস্তারিত জানালেন নায়কের যাপনের কথা।
ব্যায়াম ও শরীরচর্চা
শুটিং শুরুর আগে প্রতি দিন প্রায় দু’ঘণ্টা ব্যায়াম চলত। সময় মিলত কখনও সকালে, কখনও শুটিংয়ের বিরতিতে। প্রথমে কার্ডিয়ো করতেন। চর্বি ঝরানোর ব্যায়াম, যা শরীরের বিপাকক্রিয়া বাড়িয়ে দ্রুত ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে। তা ছাড়া বুক, বাহু, পিঠ, পা, প্রতিটি অংশের জন্য আলাদা আলাদা ব্যায়াম করতে হত অহানকে। পেটের পেশি গঠনের জন্য প্রতি দিন অন্তত ৩০০ বার কোর পেশি মজবুত করার ব্যায়াম করানো হত তাঁকে। স্বল্প সময়ে অনেক বেশি কসরত করার অনুশীলনও করতে হত, যাতে শরীর আরও টানটান এবং দৃঢ় হয়। মার্শাল আর্ট ধাঁচের ব্যায়াম রাখা হয়েছিল, যা শরীরের নিয়ন্ত্রণ বাড়াত।
খাওয়াদাওয়া
অহানের খাদ্যাভ্যাস থেকে কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রোটিন রাখা হয়েছিল বেশি করে। নিয়মিত ডিমের সাদা অংশ (প্রায় ৩০টি), সেদ্ধ মুরগির মাংস, মাছ খাওয়ানো হতো। সব্জি, স্যুপ, দইয়ের মতো হালকা খাবার খেতেন বেশি পরিমাণে, যাতে পেটও ভরে, আবার চর্বিও জমে না। ভাজাভুজি, অতিরিক্ত তেল-মশলাদার বা ভারী খাবার সম্পূর্ণ বাদ। প্রতি দিন অন্তত চার লিটার জল খাওয়ার নিয়ম ছিল। এর সঙ্গে ইলেক্ট্রোলাইট মিশ্রিত পানীয়ও দেওয়া হত অহানকে। নুনের ব্যবহার কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল খাবার থেকে। মিষ্টি বা চিনিযুক্ত খাবারও পুরোপুরি নিষিদ্ধ ছিল। পাশাপাশি ভিটামিন এবং খনিজের মাত্রার দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হত।
বিশ্রাম এবং ঘুম
শুটিংয়ের ব্যস্ততার মাঝে ফাঁকা সময় পেলেই বিশ্রাম নিয়ে নিতেন অহান। কখনও গাড়িতে, কখনও ভ্যানিটি ভ্যানে একটু ঘুমিয়ে নিলেই সতেজ বোধ করতেন নায়ক। অন্তত পাঁচ ঘণ্টার ঘুম বাধ্যতামূলক ছিল। তার কমে শরীর ঠিক রাখা সম্ভব হত না।
শৃঙ্খলিত ব্যায়াম, নির্দিষ্ট খাদ্যাভ্যাস, প্রচুর জলপান ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম— এই চার স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়েই অহান তাঁর শরীরে আমূল বদল এনেছিলেন।