ডিএ কি পাবেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মীরা? সুপ্রিম কোর্টে শেষ হল শুনানি, রায় স্থগিত রাখল দুই বিচারপতির বেঞ্চ

সুপ্রিম কোর্টে সোমবার শেষ হল ডিএ মামলার শুনানি। রায় ঘোষণা স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি সঞ্জয় কারোল এবং বিচারপতি প্রশান্ত কুমার মিশ্রের বেঞ্চ। কারও কোনও বক্তব্য থাকলে তা লিখিত আকারে জমা দিতে বলেছে শীর্ষ আদালত।

রাজ্যকে আগেই ডিএ-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। এ জন্য ছ’সপ্তাহ সময়ও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সময়সীমার মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ দিতে পারেনি। আদালতের কাছ থেকে আরও ছ’মাস সময় চাওয়া হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে গত ৪ অগস্ট থেকে ৭ অগস্ট প্রতি দিনই শুনানি চলেছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কারোল এবং বিচারপতি মিশ্রের বেঞ্চে। এর পরে গত ১২ অগস্ট সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি পিছিয়ে গিয়েছিল। সূত্র মারফত জানা যায়, ওই দিন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (এসআইআর) সংক্রান্ত মামলায় ব্যস্ত ছিলেন। তার পরেও ডিএ মামলার শুনানি পিছিয়ে যায়।

কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের হারে রাজ্যকেও ডিএ দিতে হবে, এই দাবিকে সামনে রেখে শুরু হয় মামলা। স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (এসএটি), কলকাতা হাই কোর্ট হয়ে মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ২০২২ সালে কলকাতা হাই কোর্ট সরকারি কর্মীদের পক্ষে রায় দেয়। উচ্চ আদালত বলে, ডিএ রাজ্য সরকারের কর্মীদের অধিকার। কর্মীরা কেন্দ্রীয় হারে তা পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যকে বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছে, আরও সময় প্রয়োজন। আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে বকেয়া ডিএ সংক্রান্ত কোনও বরাদ্দ ছিল না। তারা সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ পুনর্বিবেচনারও আর্জি জানায়।

রাজ্যের যুক্তি ছিল, মহার্ঘ ভাতা বাধ্যতামূলক নয়। ডিএ কর্মীদের মৌলিক অধিকার নয়। তা ছাড়া কেন্দ্র ও রাজ্যের আর্থিক পরিকাঠামো ভিন্ন। কেন্দ্র যে হারে ডিএ দেয়, তার সঙ্গে রাজ্যের তুলনা চলে না। অন্য দিকে, মামলাকারী পক্ষের যুক্তি ছিল, নির্দিষ্ট সময়মতো ডিএ দেওয়া সরকারের নীতির মধ্যে পড়ে। খেয়ালখুশি মতো ডিএ দেওয়া যায় না। তাদের দাবি, বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ডিএ দিতে হবে। প্রয়োজনে বকেয়া ডিএ কিস্তিতে দেওয়া হোক। সেই মামলার শুনানি শেষ হল সোমবার সুপ্রিম কোর্টে। রায়দান স্থগিত রাখল বিচারপতিদের বেঞ্চ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.