অঙ্গনওয়াড়ি (আইসিডিএস)-র সুপারভাইজ়ার পদে ৩৩৭৬ নিয়োগ নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশের উপর কোনও স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু রাখতে পারবে রাজ্য সরকার। সব পক্ষের কাছে হলফনামা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ৬ সপ্তাহ পরে ফের এই মামলার শুনানি হবে। তবে সুপ্রিম কোর্ট এ-ও জানিয়ে দিয়েছে, এই ছ’সপ্তাহের মধ্যে যে নিয়োগগুলি হবে, সেগুলির ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে শীর্ষ আদালতের রায়ের উপরেই।
২০১৯ সালে রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ দফতর আইসিডিএস সুপারভাইজ়ার পদে ৩৩৭৬টি নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। এর মধ্যে ৪২২টি পদ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করার কথা বলা হয়। বাকি ২,৯৫৪টি পদ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)-এর মাধ্যমে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। কিন্তু, ২০১৫ সালে সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রের তরফে একটি নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছে ৫০ শতাংশ পদোন্নতি এবং বাকি ৫০ শতাংশ নতুন নিয়োগ করতে হবে। এই নিয়েই মামলা হয় হাই কোর্টে।
রাজ্য সরকারের বক্তব্য ছিল, কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তিটি ২০১৫ সালের। তাই ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরের আগে পর্যন্ত শূন্যপদগুলিতে ২৫ শতাংশ পদোন্নতি এবং ৭৫ শতাংশ নতুন নিয়োগ করা হবে। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তৈরি হওয়া শূন্যপদগুলিতে ৫০ শতাংশ পদোন্নতি এবং ৫০ শতাংশ নতুন নিয়োগ করা হবে। কিন্তু তা মানতে চান না অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন। এ অবস্থায় প্রথমে কলকাতা হাই কোর্টের একক বেঞ্চে মামলা করেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। একক বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, কেন্দ্রের ২০১৫ সালের বিজ্ঞপ্তি অনুসারেই নিয়োগ করতে হবে।
একক বেঞ্চের নির্দেশের প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়। সেখানেও বলে দেওয়া হয়, কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তি অনুসারেই নিয়োগ করতে হয়। হাই কোর্টের একক বেঞ্চ এবং ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তিকেই প্রাধান্য দেওয়ার পরে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে বিচারপতি পঙ্কজ মিথল এবং বিচারপতি প্রসন্ন বি বরালের বেঞ্চে মামলাটির শুনানি ছিল। সেখানে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের হয়ে এজলাসে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী। হাই কোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশের আর্জি জানায় রাজ্য সরকার। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কোনও স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে না। সব পক্ষের থেকে হলফনামা তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ছ’সপ্তাহ পরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। এর মধ্যে রাজ্য নিয়োগ প্রক্রিয়া চালাতে পারবে। তবে এই সময়ের মধ্যে যে নিয়োগগুলি হবে, তার ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে এই মামলার রায়ের উপরেই, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।