রাশিয়া থেকে সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসের জন্য তেল কেনা শুরু করল ভারতের দুই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। ইন্ডিয়ান অয়েল এবং ভারত পেট্রোলিয়াম— দুই সংস্থার আধিকারিক সূত্রে এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। ওই সূত্রের ভিত্তিতে রয়টার্স জানিয়েছে, স্বল্প ছাড় এবং মার্কিন হুমকির আবহে দুই সংস্থাই গত জুলাই মাসে তেল কেনা বন্ধ রেখেছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাশিয়া তেলে ছাড় বৃদ্ধি করায় আবার মস্কো থেকে তেল কেনা শুরু করেছে দুই ভারতীয় সংস্থা। যদিও তেল কেনা বন্ধ হয়েছিল বলে কোনও তথ্য সরকারি ভাবে অতীতে জানা যায়নি।
রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর অসন্তুষ্ট মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের অভিযোগ, ভারতকে তেল বিক্রির লভ্যাংশ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ব্যবহার করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সাম্প্রতিক সময়ে বার বার এই অভিযোগ তুলেছেন তিনি। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণেই যে ভারতের উপর চড়া হারে শুল্ক চাপাচ্ছে আমেরিকা, সে কথাও গোপন রাখেননি ট্রাম্প। এই আবহে গত ১ অগস্ট এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানায়, ইন্ডিয়ান অয়েল, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম, ভারত পেট্রোলিয়াম এবং ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি পেট্রোকেমিক্যাল লিমিটেড রাশিয়া থেকে তেল কেনা স্থগিত রেখেছে।
যদিও তার পরের দিনই নয়াদিল্লির সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘নিউ ইয়র্ক টাইম্স’ জানায়, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধ করছে না ভারত। রাশিয়ার থেকে খনিজ তেল কেনা বন্ধ রাখার দাবি উড়িয়ে দেয় ভারতের ওই সরকারি সূত্র। উচ্চপদস্থ ওই সরকারি আধিকারিকেরা জানিয়েছিলেন, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পরেও নীতিতে কোনও পরিবর্তন হয়নি। এমনকি, রাশিয়া থেকে তেল কেনা কমানোর জন্য উপরমহল থেকেও সংস্থাগুলিকে কোনও নির্দেশ পাঠানো হয়নি।
প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে চলতে থাকা রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে উদ্যোগী হয়েছেন ট্রাম্প। সেই লক্ষ্যে গত সপ্তাহে তিনি আলাস্কায় বৈঠকে বসেন পুতিনের সঙ্গে। ওই বৈঠকের আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ফক্স নিউজ় রেডিয়ো’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প দাবি করেন, ভারতের উপর শুল্ক চাপানো কাজে দিয়েছে। অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর ফলে রাশিয়া থেকে তেল কেনা থেকে তিনি ভারতকে দূরে রাখতে পেরেছেন। কূটনৈতিক এই টানাপড়েনের আবহেই এ বার রয়টার্স ফের জানাল, গত জুলাই মাসে রাশিয়া থেকে তেল কেনা স্থগিত রেখেছিল ভারতের দুই সংস্থা। তবে এ বার মস্কো তেলের উপর ছাড় বৃদ্ধি করতেই আবার রাশিয়া থেকে তেল কেনা শুরু করেছে ভারতের দুই সংস্থা। যদিও রাশিয়া থেকে তেল আমদানি প্রসঙ্গে ভারতীয় সংস্থাগুলি সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করেনি।