২০০২ সালের ভোটার তালিকা নেই রাজ্যের কয়েকশো বুথের! কেন্দ্রীয় কমিশনকে সমস্যার কথা জানাবেন বাংলার সিইও

খুঁজে না-পাওয়ায় রাজ্যের কয়েকশো বুথের ২০০২ সালের ভোটার তালিকা আপলোড করা হবে না। ওই ভোটার তালিকা নেই। তাই প্রকাশ করা যাচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনকে ওই মর্মে তথ্য জানাতে চলেছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর (সিইও)। মঙ্গলবার সিইও দফতর সূত্রে খবর, তালিকা যে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তা আগামী বুধবারই জানিয়ে দেওয়া হবে। কমিশনের অনুমতি মিললে ২০০৩ সালের খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে। সিইও দফতরের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমাদের কাছে ২০০৩ সালের ড্রাফ্ট লিস্ট (খসড়া তালিকা) রয়েছে।’’

২০০২ সালে রাজ্যে শেষ বার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (এসাইআর) হয়েছিল। ২০২৫ সালে আবার ওই ধরনের সমীক্ষা হওয়ার কথা। কমিশন ২০০২ সালকে ভিত্তি করে নতুন সমীক্ষার কাজ শুরু করবে। সেই অনুযায়ী রাজ্যের সিইও দফতরকে ২০০২ সালে ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে বলে কমিশন। রাজ্যের সকল জেলাশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয় ২৩ বছর আগের তালিকা সিইও দফতরে জমা দেওয়ার জন্য। তার প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে নিজস্ব ওয়েবসাইটে ভোটার তালিকা প্রকাশের কাজ শুরু করেছে সিইও দফতর। কিন্তু ওই কাজ করতে গিয়ে একটি সমস্যা দেখা দিয়েছে— সব জেলা থেকে সংশ্লিষ্ট বছরের পূর্ণ ভোটার তালিকা পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েকটি জেলা থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এত পুরনো নথি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সিইও দফতরের এক কর্মী জানিয়েছেন, অনেক বুথের ভোটার তালিকা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, এ কথা ঠিক। আবার অনেক বুথের তালিকা পাওয়া গেলেও তালিকা অস্পষ্ট বা নষ্ট হওয়ার ফলে ওয়েবসাইটে আপলোড করা যাচ্ছে না।

এর আগে সিইও দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছিলেন, ভোটার তালিকা সংরক্ষিত নথি। জেলাশাসকদের কাছে তা গচ্ছিত রয়েছে। কয়েকটি জায়গায় খুঁজে পেতে সমস্যা হয়েছে। তবে আগামিদিনে তা পাওয়া যাবে। এখন ওই আধিকারিক বলছেন, ২৯৪টি বিধানসভায় ৮০ হাজারেরও বেশি বুথ ছিল। তার সম্পূর্ণ তালিকা খুঁজে বার করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। তবে বেশির ভাগ বিধানসভা আসনের ২০০২ সালের ভোটার তালিকা খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। কয়েকটি জায়গার তালিকা পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘‘২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম খুঁজে পাওয়া না গেলে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে। ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কা করতে পারেন অনেকে। এই অবস্থায় কমিশন জানিয়ে দেবে, যে সমস্ত বুথের তালিকা পাওয়া যাবে না, সেখানে পরের বছর অর্থাৎ, ২০০৩ সালের ড্রাফ্ট (খসড়া) তালিকা প্রকাশ করা হবে। সেই তথ্য সহজেই পাওয়া যাবে।’’

সিইও দফতর সূত্রে খবর, এ বার তারা কমিশনকে জানিয়ে দিচ্ছে যে, কোন কোন বুথের তালিকা পাওয়া যায়নি। কমিশনের অনুমতি পেলে সেখানকার ২০০৩ সালের ড্রাফ্ট তালিকা প্রকাশ করা হবে। রাজ্যের মধ্যে একমাত্র কুলপি বিধানসভা (দক্ষিণ ২৪ পরগনা) আসনের একটি বুথেরও ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি সিইও দফতর। সেখানে প্রায় ২০০-র বেশি বুথ রয়েছে। বীরভূমের রামপুরহাট বিধানসভার একটি বুথের তালিকা নেই। তালিকা আপলোড হয়নি গাইঘাটা বিধানসভা (উত্তর ২৪ পরগনা) আসনের প্রায় ১০০টি বুথের। এ রকম বিভিন্ন বিধানসভা আসনের অনেক বুথের তালিকা অমিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.