মঙ্গলবার ডুরান্ডের কোয়ার্টার ফাইনালের সূচি, ১৭ অগস্ট ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান?

ডুরান্ড কাপে গ্রুপ শীর্ষে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। দুই প্রধানই গ্রুপের প্রত্যেকটা ম্যাচ জিতেছে। আগামী মঙ্গলবার ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনালের ড্র। ময়দানে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, আগামী ১৭ অগস্ট মুখোমুখি হবে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। সেই ম্যাচ হবে কলকাতার যুবভারতীতে।

সূত্রের খবর, ১৭ অগস্ট ডার্বি আয়োজন করতে চেয়ে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটকে ইতিমধ্যেই না কি চিঠি দিয়েছে ডুরান্ড কাপ কর্তৃপক্ষ। পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছে ওই দিন। ভেতরে ভেতরে না কি ডার্বি আয়োজনের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার ডুরান্ডের শেষ রাউন্ডের খেলা। তার পর ‘জ়ুম কলে’ সকল দলের প্রতিনিধিদের সামনে নকআউটের ড্র হবে। সেখানেই নির্ধারিত হয়ে যাবে রবিবার ডার্বি হচ্ছে কি না।

ডুরান্ডের চারটে কোয়ার্টার ফাইনালের মধ্যে একমাত্র রবিবারের ম্যাচটাই হবে কলকাতায়। যদি সেই ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান না হয়, তা হলে দুই দলের অন্তত একজনকে খেলতে হবে বাইরের মাঠে। সেখানে প্রত্যাশিত সমর্থন পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তাই ডুরান্ত কর্তৃপক্ষ চাইছেন যাতে রবিবারই কলকাতা ডার্বি করা যায়। অন্যান্য বার গ্রুপ পর্বেই ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানকে একসঙ্গে রেখে কলকাতা ডার্বি আয়োজন করা হত। এ বার সেটা হয়নি। তাই নকআউটে যাতে দুই দল মুখোমুখি হতে পারে তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফলে মনে করা হচ্ছে, ভিতরে ভিতরে সূচি তৈরি। অন্তত ১৭ অগস্ট কলকাতা ডার্বি যে হবে, তা মোটামুটি নিশ্চিত। বাকিটা প্রথা মেনে একটা মিটিং হবে।

তবে অন্য একটা বিষয় রয়েছে। ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান দুই দলই গ্রুপ সেরা হয়ে নকআউটে গিয়েছে। নকআউটে দুই গ্রুপ সেরা দলের লড়াই সাধারণত হয় না। বিশ্বকাপ থেকে মহাদেশীয় ফুটবল, সব জায়গাতেই গ্রুপ সেরা দল নকআউটের প্রথম পর্বে অপেক্ষাকৃত সহজ দল পায়। উদাহরণ স্বরূপ, ‘এ’ গ্রুপের সেরা দল খেলে ‘বি’ গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানাধিকারী দলের সঙ্গে। সে ক্ষেত্রে ডুরান্ডে কী করে দুই গ্রুপের সেরা দলকে নকআউটে খেলানো হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এতে বাকি দলগুলোর কেউ কেউ বাড়তি সুবিধা পেয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

মোহনবাগানের এক সূত্র জানিয়েছেন, ১৭ অগস্ট যে ডার্বি হতে পারে সে খবর তাদের কাছেও রয়েছে। তারাও ভেতরে ভেতরে ডার্বির জন্যই প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ডার্বি খেলতে সমস্যা নেই। তবে ইস্টবেঙ্গলের এক সূত্রের দাবি, ডার্বি নিয়ে কোনও খবর নেই তাদের কাছে। ডুরান্ড আয়োজকদের তরফে এ নিয়ে কোনও ইঙ্গিতও দেওয়া হয়নি। ইস্টবেঙ্গলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, কোয়ার্টারে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলার ইচ্ছা নেই তাদের। এর মূল কারণ প্রস্তুতির অভাব। এখনও সকল ফুটবলার দলের সঙ্গে সড়গড় হননি। সঠিক প্রস্তুতি ছাড়া ডার্বি খেলতে চায় না তারা।

ইস্টবেঙ্গলেরই আর এক অংশের মতে, তারাই আগে প্রস্তুতি শুরু করেছে। অনেক খেলোয়াড়ই প্রায় দেড় মাসের উপর অনুশীলন করেছেন। বিদেশিরাও অনেকে আগেই চলে এসেছিলেন। সেখানে মোহনবাগানের দিমিত্রি পেত্রাতোস সবে এসেছেন। এখনও ম্যাচ খেলেননি। কোচ হোসে মোলিনাও কিছু দিন আগে এসেছেন। ফলে প্রস্তুতির অভাব ইস্টবেঙ্গলের নয়, বরং মোহনবাগানের রয়েছে।

মোহনবাগানের একটা সুবিধা হল, তারা প্রায় গত বারের দলই ধরে রেখেছে। নতুন মুখ খুব কম। ফলে খেলোয়াড়েরা আগে থেকেই একে অপরকে চেনেন। সেখানে ইস্টবেঙ্গলের কয়েক জন দেশীয় ফুটবলার ছাড়া বাকি সবাই নতুন। সাউল ক্রেসপো এবং দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস বাদে বাকি বিদেশিদের সকলকেই বদলে দেওয়া হয়েছে। যদিও ডুরান্ড কাপে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান দুই দলই ভাল খেলেছে।

১৭ অগস্ট ডার্বি হচ্ছে, এমন অনেক পোস্টার ঘুরছে সমাজমাধ্যম এবং হোয়াটসঅ্যাপে। শুধু তাই নয়, কোয়ার্টারের সম্ভাব্য সূচিও ‘প্রকাশ্যে’ চলে এসেছে। সেখানে জামশেদপুরের বিরুদ্ধে ডায়মন্ড হারবার, বোড়োল্যান্ড/আইটিবিপি-র বিরুদ্ধে শিলং লাজং, এবং নর্থইস্টের বিরুদ্ধে রিয়াল কাশ্মীর/ভারতীয় নৌসেনা খেলবে বলে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় শুরু বোড়োল্যান্ড এফসি এবং আইটিবিপি এফটি-র খেলা। সেই ম্যাচ শেষে হলেই ঘোষিত হবে ডুরান্ডের সূচি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.