কনিষ্ঠতম গ্র্যান্ডমাস্টার গুকেশও নাকি বদমেজাজি ছিলেন! মাত্র দু’টি অভ্যাসেই আজ স্বভাবে আমূল বদল

সর্বকনিষ্ঠ হিসাবে দাবায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড তাঁর। মাত্র ১৮ বছরে এই শিরোপার অধিকারী ডি গুকেশ ওরফে গুকেশ ডোম্মারাজু। এখন তিনি আট থেকে আশির অনুপ্রেরণা বললে অত্যুক্তি হয় না। গুকেশের মতো‌ দাবা খেলার প্রতিভা হয়তো অর্জন করা সকলের ক্ষেত্রে সহজ না-ও হতে পারে, কিন্তু তাঁর মতো ধৈর্য, ঠান্ডা স্বভাবের মানুষ হয়ে ওঠা কঠিন নয়। দাবাড়ু ম্যাগনাস কার্লসেনকে হারানোর ভিডিয়ো গোটা বিশ্বে ছেয়ে গিয়েছিল। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছিল পরাজয় টের পাওয়ার পর ম্যাগনাস এবং গুকেশের বিপরীতধর্মী প্রতিক্রিয়া। এক জন রাগে টেবিল চাপড়ে উঠে পড়েন, অন্য জন জয়ের স্বাদ পেয়েও শান্ত, নীরব। উচ্ছ্বাস অথবা ম্যাগনাসের আচরণে বিরক্তি— কোনও কিছুই প্রকাশ পায়নি গুকেশের চোখেমুখে। কেবল হাত মেলানোর সময়ে ঠান্ডা লড়াইয়ের আঁচ পাওয়া গিয়েছিল। তখন থেকে সকলের মনে প্রশ্ন, কী ভাবে এত শান্ত মাথায় সব কিছুকে সামলে নেন ১৯ বছরের যুবক?

উত্তর দিলেন খোদ গ্র্যান্ডমাস্টার। গুকেশ জানালেন, তিনি নাকি আদপে শান্তশিষ্ট নন। নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা তাঁর স্বভাবগত ছিল না কখনওই। আগে কোনও ম্যাচে হেরে গেলে তীব্র প্রতিক্রিয়া বেরিয়ে পড়ত তাঁর। কিন্তু এর প্রভাব পরবর্তী আরও কয়েকটি ম্যাচে পড়ত। গুকেশ বুঝতে পারেন, আখেরে কোনও লাভই হচ্ছে না তাঁর। আর তখনই তিনি নিজেকে পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নেন।

ম্যাগনাস কার্লসেনকে হারানোর ভিডিয়ো গোটা বিশ্বে ছেয়ে গিয়েছিল।

গুকেশ বলছেন, ‘‘অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ এবং বদমেজাজি ছিলাম আমি। বায়না করা, দাবিদাওয়া জানানো, সবই ছিল আমার স্বভাবে। কিন্তু পরে বুঝতে পারি, আমার আচরণ, স্বভাব দাবায় প্রভাব ফেলছে। নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করা শিখতে হবে। আর তখনই আমি যোগাসন আর ধ্যান করা শুরু করি। কেবল দাবায় নয়, জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে তা। শান্ত হয়েছি আমি।’’

গুকেশ যোগ এবং ধ্যানে তুখো়ড় নন, কিন্তু সাধারণ, সহজ পদ্ধতিতে অনুশীলন করে উপকার পেয়েছেন তিনি। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে মনোযোগ দিয়ে যোগাসন করেন ১৯ বছরের গ্র্যান্ডমাস্টার।

বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দাবাড়ুর জীবনের শিক্ষা কাজে আসতে পারে আপনারও। কারণ রোজের ঝড়জল, ওঠানামার সঙ্গে বোঝাপড়া করা অথবা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য তাঁরই মতো যোগাসন এবং ধ্যানে মন দিতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.