ভারতের সঙ্গে সিরিজ ড্র করে ‘ভীত’ স্টোকসেরা! হঠাৎই বিশ্বকাপ নিয়ে সুরবদল ইংল্যান্ডের

নিজেদের দেশে ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ় ড্র করেছে ইংল্যান্ড। হেডিংলে ও লর্ডসে ভারত হাতের জয় পায়ে না ঠেললে সিরিজ় ০-৪ হারতেও পারত তারা। তার পরেই কি ভয় পেয়েছে ইংল্যান্ড? বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফরম্যাটে বদলের চিন্তাভাবনা করছে আইসিসি। এত দিন ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড তার পক্ষে ছিল। হঠাৎই সুর বদল করেছে তারা।

এত দিন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ন’টা দেশ খেলত। কিন্তু সেই প্রতিযোগিতা দুই ভাগে ভাগ করার পরিকল্পনা চলছে। প্রথম ডিভিশনে শীর্ষ চার দল থাকবে। ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেখানে রাখা হতে পারে। তারা নিজেদের মধ্যে খেলবে। তাদের মধ্যে থেকেই একটা দল টেস্ট বিশ্বকাপ জিতবে। বাকিরা দ্বিতীয় ডিভিশনে খেলবে। সেখানে যারা চ্যাম্পিয়ন হবে তারা পরের পর্বে প্রথম ডিভিশনে খেলবে। ঠিক তেমনই প্রথম ডিভিশনে যারা শেষে থাকবে তারা পরের পর্বে দ্বিতীয় ডিভিশনে চলে যাবে। এমনই পরিকল্পনা চলছে। জুলাই মাসে আইসিসি-র বার্ষিক সভায় এই নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। তবে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। মনে করা হচ্ছে, ২০২৭-২০২৯ পর্বে সেই বদল হতে পারে।

এত দিন এই ডিভিশন ভাগের পক্ষে ছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু হঠাৎ তারা সুর বদল করেছে। কারণ, অবনমনের ভয় পাচ্ছে তারা। ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান রিচার্ড থম্পসন বিবিসি-কে বলেছেন, “আমরা দুটো ডিভিশন চাই না। কারণ, যদি কোনও পর্বে আমরা খারাপ খেলি, তা হলে দ্বিতীয় ডিভিশনে নেমে যাব। সে ক্ষেত্রে ভারত, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের বিরুদ্ধে আমরা খেলতে পারব না। তাতে আর্থিক ক্ষতিও হবে। আমরা সেটা চাইছি না। ওদের বিরুদ্ধে সিরিজ় খুব গুরুত্বপূর্ণ।” থম্পসনের কথা থেকে স্পষ্ট, অবনমনের ভয়েই এই সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছে।

তার বদলে চলতি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপকেই আরও উন্নত করার প্রস্তাব দিয়েছেন থম্পসন। তিনি বলেছেন, “আমরা এই প্রতিযোগিতাকেই আরও উন্নত করতে পারি। এ বারই দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দল অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে। সেই আশা খুব কম লোকই করেছিল। ইংল্যান্ডের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা সমর্থন পেয়েছে। তাই দেখতে হবে যে যে দল রয়েছে তাদের মধ্যে কী ভাবে আরও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় আয়োজন করা যায়। প্রত্যেককে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে খেলাতে হবে। তা হলে এই প্রতিযোগিতার জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে।”

এখনও পর্যন্ত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তিনটে পর্ব হয়েছে। প্রথম বার ফাইনাল খেলেছিল ভারত ও নিউ জ়িল্যান্ড। চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল নিউ জ়িল্যান্ড। দ্বিতীয় পর্বে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। শেষ বার অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তিনটে ফাইনালই ইংল্যান্ডে হয়েছে। আপাতত ২০৩১ সাল পর্যন্ত সেখানে ফাইনাল হবে। অথচ এক বারও তারা ফাইনালে উঠতে পারেনি। এ বার ভারতকে হারাতে পারলে সেই আশা বাড়ত। কিন্তু ভারতের কাছে দেশের মাটিতে টেস্ট সিরিজ় ড্র করেছে তারা। তার পরেই কি ভয় পেয়েছে ইংল্যান্ড? তাদের সুরবদল সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.