কলকাতায় রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকায় বাড়ি থেকে উদ্ধার হল এক প্রৌঢ়ের দেহ। তাঁর দেহ ঝুলছিল ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে। মৃতের নাম দিলীপকুমার সাহা। পরিবারের অভিযোগ, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে আতঙ্কের জেরেই আত্মহত্যা করেছেন ষাটোর্ধ্ব ওই প্রৌঢ়। পুলিশ সূত্রে খবর, একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়েছে।
কী কারণে তাঁর মৃত্যু, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে, আত্মহত্যাই করেছেন দিলীপ। রবিবার সকাল সাড়ে ৭টার কিছু পরে বিষয়টি পরিবারের নজরে আসে। গামছা গলায় জড়ানো অবস্থায় সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছিলেন তিনি। পরে এমআর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দিলীপকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পরিবারের দাবি, এনআরসি নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকতেন দিলীপ। বাংলাদেশি তকমা লেগে যাওয়ার আশঙ্কাতেও থাকতেন তিনি। এই সব আতঙ্কের জেরেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পরিবারের।
রবিবার এই ঘটনার খবর পেয়ে বর্ধমান থেকে ফিরেই রিজেন্ট পার্কে মৃতের বাড়িতে যান টলিগঞ্জের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। নিহতের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। পরে এই আত্মহত্যার ঘটনা নিয়ে সমাজমাধ্যমেও পোস্ট করে তৃণমূল। সেখানেও দেশ জুড়ে বাঙালিদের প্রতি হেনস্থার অভিযোগ তুলেছে রাজ্যের শাসকদল।
সমাজমাধ্যমের ওই পোস্টে তৃণমূল লিখেছে, “বিজেপির আতঙ্কে আত্মহত্যা করেছেন কলকাতার টালিগঞ্জের এক বাসিন্দা। বিজেপি দেশ জুড়ে যে ভাবে বাঙালি জাতির উপর আক্রমণ শুরু করেছে, বৈধ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও এনআরসির নোটিস পাঠাচ্ছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে, এসআইআর করে ভোটাধিকার কেড়ে নিচ্ছে— এই সকল কিছুর আতঙ্কে দিন গুজরান করতে করতে শেষমেশ আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন এক বাসিন্দা।” ওই পোস্টে বিজেপিকে ‘বাংলা-বিরোধী’ বলেও বিঁধেছে তৃণমূল।
সম্প্রতি বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য নিবিড় সমীক্ষা চালিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাতে খসড়া তালিকা থেকে অনেক ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। এ দিকে বিজেপিশাসিত বিভিন্ন রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি তকমা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। তাঁদের কয়েক জনকে বাংলাদেশে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছিল। পরে আবার তাঁদের ফিরিয়ে আনা হয়। এই ঘটনাগুলি নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে সুর চড়িয়ে যাচ্ছে রাজ্যের শাসকদল। এরই মধ্যে রিজেন্ট পার্কে প্রৌঢ়ের আত্মহত্যার ঘটনায় নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধল।