প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে পৃথক ভাবে বৈঠক সারলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। রবিবার প্রথমে রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে বৈঠক সারেন মুর্মু। পরে শাহের সঙ্গেও পৃথক ভাবে বৈঠক করেন তিনি। উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে জগদীপ ধনখড়ের ইস্তফা এবং নতুন উপরাষ্ট্রপতি বাছাই ঘিরে গুঞ্জনের মাঝে এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
দুই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা প্রকাশ্যে আসে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর বা শাহের দফতর থেকে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে সমাজমাধ্যমে দু’টি বৈঠকের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। পরে শাহও সেই ছবি পোস্ট করেন।
দু’সপ্তাহ আগে গত ২১ জুলাই উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন জগদীপ ধনখড়। স্বাস্থ্যজনিত কারণে রাষ্ট্রপতিকে ওই ইস্তফাপত্র পাঠান তিনি। তড়িঘড়ি তাঁর ইস্তফাপত্র গৃহীতও হয়। নির্বাচন কমিশনও জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে। পর পর এই ঘটনাগুলি রবিবারের জোড়া বৈঠকের গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সংসদের বাদল অধিবেশনে গত মঙ্গল এবং বুধবার ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ উভয়েই সেখানে বক্তৃতা করেছেন। এ ছাড়া বিহারে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা নিয়েও ধারাবাহিক ভাবে প্রশ্ন তুলছে বিরোধী দলগুলি। সংসদে এ বিষয়ে আলোচনারও দাবি তুলছে তারা। এই আবহে রবিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে মুর্মুর সঙ্গে আলাদা ভাবে সাক্ষাৎ করলেন মোদী এবং শাহ।
ঘটনাচক্রে, প্রধানমন্ত্রী ব্রিটেন এবং মলদ্বীপ সফর শেষে দেশে ফেরার পর এই প্রথম রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করলেন। ব্রিটেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি সেরে এসেছেন তিনি। তবে ব্রিটেনের সঙ্গে ওই চুক্তির কয়েক দিন পরেই ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সঙ্গে রাশিয়া থেকে অস্ত্র এবং জ্বালানি কেনা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। এর জন্য ভারতের উপর পৃথক ‘জরিমানা’ (পেনাল্টি)-র হুঁশিয়ারিও দিয়েছে আমেরিকা। বস্তুত, এশিয়ার অনেক দেশের উপরই ভারতের তুলনায় কম শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর থেকে মোদী সরকারের কূটনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে ভারতের কী পদক্ষেপ হবে, তা নিয়েও বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছে।


বস্তুত, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি আছে। গত সপ্তাহেই মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ আরও ছ’মাস বৃদ্ধির বিষয়ে লোকসভায় অনুমোদন মিলেছে। রাজ্যসভায় এ বিষয়ে এখনও প্রস্তাব হয়নি। এই আবহে রবিবার রাষ্ট্রপতি মুর্মুর সঙ্গে বৈঠক সারলেন মোদী এবং শাহ।