রাশিয়া থেকে তেল কেনা স্থগিত রেখেছে ভারতের চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। চারটি সূত্র উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে রয়টার্স সংবাদমাধ্যম। তাদের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, গত সপ্তাহ থেকে ভারতের চারটি সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েল, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম, ভারত পেট্রোলিয়াম এবং ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি পেট্রোকেমিক্যাল লিমিটেড রাশিয়া থেকে তেল কেনা স্থগিত রেখেছে।
এই প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেনি ওই চার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানায়নি পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকও। রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রাশিয়ার বিকল্প হিসাবে আবু ধাবির মতো পশ্চিম এশিয়া এবং পশ্চিম এশিয়ার দেশ থেকে অশোধিত তেল আমদানি করছে সংস্থাগুলি।
ট্রাম্প কিছু দিন আগেই বলেছেন, রাশিয়া যদি ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি সমঝোতায় পৌঁছোতে রাজি না-হয়, তা হলে রাশিয়া ও তার বাণিজ্যিক বন্ধু দেশগুলির উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। শুধু তা-ই নয়, বুধবার ভারতীয় পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার পাশাপাশি রাশিয়া থেকে তেল এবং অস্ত্র কেনার জন্য ভারতের উপর পেনাল্টি (জরিমানা) ধার্য করার কথা ঘোষণা করেন তিনি। তবে জরিমানার অঙ্ক এখনও জানায়নি আমেরিকা। অন্য দিকে, ভারত দীর্ঘ দিন ধরেই রাশিয়ার খনিজ তেলের অন্যতম বড় ক্রেতা। ফলে মস্কোর থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখলে ভারতের উপরেও ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপাতে পারে আমেরিকা। ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি এবং চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার রাশিয়া থেকে তেল কেনা স্থগিত রাখা— এই দুই ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে এই ঘটনাপরম্পরাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
অবশ্য রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল কেনার নিরিখে সবার উপরে রয়েছে বেসরকারি সংস্থা রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ় এবং নায়ারা এনার্জি। এই দুই সংস্থা মস্কোর কাছ থেকে তেল কেনা স্থগিত রেখেছে কি না, তা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলির আর্থিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছিল রাশিয়া। সেই সময় রাজস্ব আদায় করতে সস্তায় তেল রফতানি করছিল মস্কো। তবে ইদানীং সেই ছাড়ের পরিমাণ কমানো হয়েছে। সেই কারণেও ভারতের সংস্থাগুলি রাশিয়া থেকে তেল কেনা স্থগিত করতে পারে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, তেল আমদানিকারী দেশ হিসাবে সারা বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। ভারতের মোট আমদানির ৩৫ শতাংশই এখন আসে রাশিয়া থেকে।