শ্রীনগরের জঙ্গলে চিনা রেডিয়োয় যোগাযোগ রাখছিল জঙ্গিরা! গোয়েন্দারা টের পেতেই আটঘাট বেঁধে শুরু হয় ‘অপারেশন মহাদেব’

শ্রীনগরের কাছে দাচিগামের জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে তিন জঙ্গিকে সোমবার খতম করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেনা এবং কাশ্মীর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, নিহতেরা পাকিস্তান থেকে আসা জঙ্গি। তবে তারা পহেলগাঁও হামলায় জড়িত ছিল কি না, তা এখনও নিশ্চিত করেনি সেনা বা পুলিশ। ‘অপারেশন মহাদেব’ এখনও চলছে। সেনা সূত্রে খবর, আটঘাট বেঁধে পরিকল্পনা করেই এই অভিযান শুরু করা হয়েছে। তার আগে লশকর-এ-ত্যায়বা এবং জইশ-এ-মহম্মদ জঙ্গিদের উপর ১৪ দিন ধরে নজর রেখেছেন গোয়েন্দারা। দাচিগামে একটি চিনা রেডিয়োর সক্রিয়তা টের পেয়েই এই নজরদারি শুরু করেন তাঁরা।

সোমবার সকালে দাচিগাম জঙ্গলে চিরুনি তল্লাশি শুরু করে ভারতীয় সেনাবাহিনী, জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ এবং সিআরপিএফ। শ্রীনগরের অদূরে মহাদেব পর্বতের পাদদেশে রয়েছে এই দাচিগামের জঙ্গল। সে কারণে অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন মহাদেব’। গত কয়েক দিন ধরে এই দাচিগামের জঙ্গলেই নজরদারি চালাচ্ছিল সেনা। বৈদ্যুতিন যন্ত্রের মাধ্যমে যেমন নজরদারি চলছিল, তেমন টহলও চলছিল।

কিন্তু কেন শুরু হয়েছিল নজরদারি? সেনার একটি সূত্র বলছে, গোয়েন্দারা জুলাইয়ের শুরুর দিকে জানতে পারেন, ওই জঙ্গল এলাকা থেকে চিনা আলট্রা রেডিয়োর মাধ্যমে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে অন্য কোথাও। তার পরেই সন্দেহ হয় গোয়েন্দাদের। দাচিগাম জঙ্গলে নজরদারি শুরু করে তারা। সেই সঙ্গে লশকর এবং জইশ জঙ্গিদের উপরেও নজরদারি শুরু হয়। তারা জানতে পারে, লশকর জঙ্গিরা ওই চিনা রেডিয়োর মাধ্যমে যোগাযোগ করছে অন্য কারও সঙ্গে। ২০১৬ সালে তার মাধ্যমে মেসেজও করেছিল। তার পরেই হারওয়ানের মালানার এলাকায় শুরু হয় তদন্ত অভিযান।

সংবাদমাধ্যমের একাংশ জানিয়েছে, দাচিগামে অভিযানে নিহতদের মধ্যে রয়েছে পহেলগাঁও হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’। তার নাম সুলেমান ওরফে হাসিম মুসা। যদিও সেনার তরফে এখনও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। কাশ্মীর জ়োনের আইজিপি বিধিকুমার বিরদিকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এখনও অভিযান চলছে। দেহ শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া চলছে। সময় এলে জানানো হবে। নিহত আর দুই জঙ্গির নাম হল আবু হামজ়া এবং ইয়াসির। শ্রীনগর পুলিশের সিনিয়র সুপার জিভি সন্দীপ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, নিহত তিন জন পাকিস্তানের। তাঁরা লশকরের জঙ্গি। তবে পহেলগাঁও হামলায় তাঁদের ভূমিকা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। জানিয়েছেন, শনাক্তকরণ চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.