বঙ্গোপসাগরে তৈরি হচ্ছে নিম্নচাপ। এই মুহূর্তে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ অঞ্চল রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তা নিম্নচাপে পরিণত হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। এর প্রভাবে আগামী দু’দিনে অত্যন্ত ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। দু’টি জেলায় লাল সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আবহবিদেরা।
কলকাতায় বৃহস্পতিবার তেমন বৃষ্টি হয়নি। তবে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যে শুধু বজ্রপাতেই অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্ষা এখনও সক্রিয়। ফলে দক্ষিণের সব জেলাতেই ঝড়বৃষ্টি চলবে। কমবেশি বৃষ্টি হবে কলকাতাতেও। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরের উপরে যে নিম্নচাপ অঞ্চল রয়েছে, তা ধীরে ধীরে পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে। এই মুহূর্তে তা সুস্পষ্ট নিম্নচাপ অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। সংলগ্ন ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭.৬ কিলোমিটার উপরে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় এটি আরও পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে সরবে এবং পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলের কাছে নিম্নচাপে পরিণত হবে। তার পর গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে আরও পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে এগোবে নিম্নচাপ। আগামী দু’দিনে তা উত্তর ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এবং সংলগ্ন ছত্তীসগঢ়ের উপর দিয়ে যাবে। এ ছাড়া, মৌসুমি অক্ষরেখা গঙ্গানগর, মেরঠ, হরদোই, পটনা, জমশেদপুর, দিঘার উপর দিয়ে বিস্তৃত। সুস্পষ্ট নিম্নচাপ অঞ্চলের মাঝ বরাবর গিয়েছে এই অক্ষরেখা। এর প্রভাবে আগামী দু’দিন দক্ষিণবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বেশ কিছু এলাকায় ঝড়বৃষ্টি চলতে পারে টানা চার দিন।
২৫ জুলাই: বাঁকুড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের কিছু কিছু এলাকায় অত্যন্ত ভারী বর্ষণ (২০ সেন্টিমিটারেরও বেশি) হতে পারে। এই দুই জেলায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। এ ছাড়া, ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি (৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার) হতে পারে ঝাড়গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, হুগলি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। এই জেলাগুলিতে রয়েছে কমলা সতর্কতা। ভারী বর্ষণের (৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার) সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণের বাকি সব জেলায়।
উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়িতেও ভারী বৃষ্টি হতে পারে শুক্রবার। বাকি জেলায় ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া এবং বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
২৬ জুলাই: ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূমে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়িতেও হতে পারে ভারী বৃষ্টি।
২৭ জুলাই: উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া এবং পূর্ব বর্ধমানে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। জলপাইগুড়ি এবং কালিম্পঙেও ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা।
২৮ জুলাই: ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পূর্ব বর্ধমানে। ভারী বৃষ্টি হতে পারে পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ায়।
২৯ জুলাই: পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়ায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ভারী বৃষ্টি হতে পারে ঝাড়গ্রাম, পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি, পূর্ব বর্ধমানে।
৩০ জুলাই: দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা।
উত্তর এবং মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঝোড়ো আবহাওয়া থাকবে। সমুদ্র সংলগ্ন বাংলা ও ওড়িশার উপকূলে ২৪ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়ার বেগ থাকবে ঘণ্টায় ৩৫ থেকে ৪৫ কিলোমিটার। ২৮ তারিখ পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।