বাংলা ভাষী রোহিঙ্গা, নাকি বেআইনি অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি মুসলিম— কাদের স্বার্থে ’বাঙালি অস্মিতা’র নৈতিক ভাষ্য তৈরি করতে উদ্যত হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস? এই প্রশ্ন তুললেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বুধবার তিনি এক্সবার্তায় লিখেছেন, “সারা ভারতে যখন বেআইনি অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে দেশ থেকে বিতাড়িত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তখন এই সব অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষাকবচ হয়ে ওঠার চেষ্টায় তৃণমূল নেত্রী।
এই ছবি দেখে কি মনে হচ্ছে যে, যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য জড়ো করা হয়েছে, এরা বাঙালি? ভাষা বাদ দিলে, এদের পরিধান, এদের সংস্কৃতি, এদের জীবনযাপনের ধারা দেখে বোঝার উপায় আছে যে এরা পশ্চিমবঙ্গ থেকে কাজের অভাবে ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় এসে বসবাস করতে বাধ্য হয়েছে, নাকি আপনার অসহযোগিতার কারণে ও জমি না দেওয়ায়, ভারত সরকার সীমান্তে ৫৪০ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া না দিতে পারায়, এরা বেআইনি ভাবে অনুপ্রবেশ করার সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ভারতবর্ষে ঘাঁটি গেড়েছে?
আর, ’বাঙালি অস্মিতা’র যখন এতই চিন্তা মাননীয়া, তাহলে যে হাজার হাজার খাঁটি বাঙালি আজ আপনার দুর্নীতির জন্যে শিক্ষকতার চাকরি হারিয়ে পথে বাংলা ভাষায় আর্তনাদ করছে, তাদের কথা আপনার কানে পৌঁছচ্ছে না কেন? অথচ ভিন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের আর্তি আপনি ঠিক শুনতে পাচ্ছেন।
আপনার সরকার ও প্রশাসন যখন যোগ্য এবং দক্ষ বাঙালি অফিসারদের থাকা সত্বেও, তাদের উপেক্ষা করে, ‘বাইরের’ লোকদের খোঁজে, যারা শুধুমাত্র আপনাদের কথায় উঠবে বসবে, তখন কোথায় যায় বাঙালি অস্মিতা?
# কেন শ্রী অত্রি ভট্টাচার্য এবং শ্রী সুব্রত গুপ্ত উপেক্ষিত হলেন এবং শ্রী মনোজ পন্তকে মুখ্য সচিব করা হল? তিনি আবার এই দুই যোগ্য বাঙালি অফিসারের তুলনায় জুনিয়র!
# কেন পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে সিনিয়র আইপিএস অফিসার শ্রী সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়কে উপেক্ষা করা হয়েছে এবং ভিন রাজ্য থেকে আসা তাঁর জুনিয়র শ্রীজীব কুমারকে ডিজিপি পদে বসানো হয়েছে?
বাংলার জনগণ জানেন যে মাননীয়া আপনি ভোটের নীতি ছাড়া কিছুই গুরুত্ব দেন না, তাই আপনার বাঙালি অস্মিতা’র নীতি যে স্রেফ আপনার পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা, তা সবাই ভালো করে জানে।”