পৃথিবীর বাইরে দু’সপ্তাহ কাটিয়ে ফেললেন ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুল্ক। নাসার অ্যাক্সিয়ম-৪ অভিযানে তিনি মহাকাশে পাড়ি দিয়েছেন। আপাতত রয়েছেন পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে ৪০৩ কিলোমিটার উপরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস)। সেখানে বসে প্রতি দিন ১৬ বার করে সূর্যোদয় দেখছেন। দু’সপ্তাহে মোট ২৩০ বার সূর্য উঠতে দেখে ফেলেছেন। অ্যাক্সিয়ম স্পেসের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে এমনটাই জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার শুভাংশুদের মহাকাশে দু’সপ্তাহ পূর্ণ হল। তাঁরা কবে পৃথিবীতে ফিরে আসবেন, এখনও স্থির হয়নি। নাসার তরফে সেই তারিখ ঘোষণা করা হবে। মহাকাশে বসে সেই ঘোষণার জন্যেই অপেক্ষা করছেন ভারতীয় মহাকাশচারী। কারণ মহাকাশে তাঁদের যা কাজ ছিল, সে সব প্রায় সম্পূর্ণ। শুভাংশুর সঙ্গে এই অভিযানে আইএসএস-এ গিয়েছেন আরও তিন নভশ্চর— ক্রু-কমান্ডার পেগি হুইটসন, মিশন বিশেষজ্ঞ স্লাওস উজানস্কি-উইজ়নিউস্কি এবং টিবর কাপু। নাসার এই অভিযানের গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশুই।
দিনে ১৬ বার করে সূর্য ওঠে মহাকাশ স্টেশনে। কারণ, প্রতি ৯০ মিনিটে পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করে আইএসএস। দিনে প্রদক্ষিণ হয় মোট ১৬ বার। আইএসএস-এ মহাকাশচারীরা লন্ডনের গ্রিনিচের সময় অনুযায়ী সময়ের হিসাব রাখেন। অ্যাক্সিয়ম স্পেসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘পৃথিবী থেকে ২৫০ মাইল উপরে বসে আমাদের ক্রু সদস্যেরা পৃথিবীর ছবি এবং ভিডিয়ো তুলছেন। প্রিয়জনদের সঙ্গে কথাও বলছেন। ২৩০ বার তাঁরা পৃথিবীর চারপাশে ঘুরে ফেলেছেন। প্রায় ১০০ লক্ষ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন।’’
মহাকাশে ৬০টিরও বেশি পরীক্ষানিরীক্ষার পরিকল্পনা ছিল অ্যাক্সিয়ম-৪ অভিযানের। তার মধ্যে বায়োমেডিক্যাল সায়েন্স, অ্যাডভান্সড মেটেরিয়াল্স, নিউরোসায়েন্স, চাষবাস এবং মহাকাশ প্রযুক্তির মতো বিষয় রয়েছে। প্রয়োজনীয় অধিকাংশ পরীক্ষানিরীক্ষাই সফল হয়েছে। অ্যাক্সিয়ম কর্তৃপক্ষের দাবি, এগুলি আগামী দিনে মহাকাশ গবেষণার নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘প্রতিটি টেস্ট টিউব, ডেটা পয়েন্ট এবং পর্যবেক্ষণ পৃথিবীর নিচু কক্ষপথে (লোয়ার আর্থ অরবিট) বসবাসের ক্ষেত্রে আমাদের এক ধাপ করে এগিয়ে দিচ্ছে।’’
গত ২৫ জুন স্পেসএক্সের ‘ড্রাগন’ মহাকাশযানে চড়ে আইএসএসের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন শুভাংশু-সহ চার নভশ্চর। প্রথম ভারতীয় হিসাবে শুভাংশুই প্রথম আইএসএস-এ গিয়েছেন। নাসা সূত্রে খবর, ১৪ জুলাইয়ের আগে তাঁদের পৃথিবীতে ফেরার দিন ঘোষণার সম্ভাবনা নেই।