মঙ্গলবার রাতেই কি চূড়ান্ত হয়ে যাবে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি? সরকারি সূত্রে ইঙ্গিত, আলোচনা ইতিবাচক

বুধবার (৯ জুলাই) শেষ হচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘পারস্পরিক শুল্ক’ স্থগিত রাখার ৯০ দিনের সময়সীমা। তার আগে মঙ্গলবার গভীর রাতেই ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত হয়ে যাতে পারে। সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘ইন্ডিয়া টুডে’-তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়েছে।

প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে, দুগ্ধজাত পণ্য (ডেয়ারি) এবং কৃষিজাত পণ্যকে আপাতত বাইরে রেখেই চূড়ান্ত হবে বাণিজ্যচুক্তির খসড়া। তবে ফল ও ভুট্টার মতো মার্কিন পণ্যের জন্য ভারতের বাজার খুলতে পারে। প্রসঙ্গত, জুন মাসের শেষপর্বে চিনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলার পরে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য ভারত। তিনি বলেছিলেন, “আমরা সবে মাত্র চিনের সঙ্গে (বাণিজ্য) চুক্তি করলাম। পরেরটাই হয়তো হবে ভারতের সঙ্গে। খুব বড় চুক্তি হবে সেটা।” সেই সঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাণিজ্যচুক্তি হলে ভারত তার বাজার খুলে দেবে আমেরিকার জন্য। যদিও সম্ভাব্য সেই চুক্তির রূপরেখা সম্পর্কে কিছু জানাননি ট্রাম্প।

যদিও কূটনৈতিক এবং বণিকমহলের একাংশের মত ছিল, চিনের মতো দ্রুত আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য সমঝোতায় পৌঁছোনো ভারতের পক্ষে কঠিন। কারণ, পথে অনেক ‘কাঁটা’। গাড়ির যন্ত্রাংশ, ইস্পাত এবং কৃষিজাত পণ্যের আমদানি শুল্ক নিয়ে মতবিরোধ চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত করার পথে ‘বাধা’ হয়েছিল বলে সরকারি সূত্রের খবর। তবে বুধবার সময়সীমা শেষ হলেও তার পরেই বর্ধিত শুল্ক প্রযুক্ত হচ্ছে না। মার্কিন বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, ‘‘নতুন হারে শুল্ক ১ অগস্ট থেকে কার্যকর হবে।’’

নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের অঙ্ক প্রায় ১৯ হাজার ১০০ কোটি ডলার। চুক্তি হলে তা এক ধাক্কায় অনেকটাই বাড়তে পারে। বস্তুত, গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা সফরের সময়ে দ্রুত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তির বার্তা দিয়েছিলেন ট্রাম্প এবং ভান্স দু’জনেই। তবে তার পর পরিস্থিতি কিছুটা বদলে যায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে শুল্কযুদ্ধ ঘোষণা করেন ট্রাম্প। পণ্য আমদানির উপর বাড়তি আমদানি শুল্ক ধার্য করেন। সেই তালিকায় ছিল ভারতও। ভারতীয় পণ্যের উপর বাড়তি ২৬ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করা হয়। পরে তা ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রাখা হলেও ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামজাত পণ্যে ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক বহাল রাখা হয়।

ঘটনাচক্রে, গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানিয়েছিলেন, কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনে আমেরিকার সঙ্গে নতুন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি সই করবে না ভারত। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘নয়াদিল্লি তার নিজের শর্তেই বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে।’’ কিন্তু লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রীর সেই দাবি খারিজ করে দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘পীযূষ গয়াল বুক চাপড়ে যা খুশি দাবি করতে পারেন। আমার কথা মনে রাখবেন, ট্রাম্পের শুল্ক ছাড়ের সময়সীমার কাছে নতি স্বীকার করবেন মোদী।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.