খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ বাজারে মধ্যরাতে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড। অন্তত ১৩০০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় দমকলের ২০টি ইঞ্জিন। আপাতত আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও বিভিন্ন জায়গায় সকাল পর্যন্ত রয়েছে ‘পকেট ফায়ার’। যা নেভানোর কাজ করছে দমকল। অর্থাৎ, আগুন এখনও পুরোপুরি আয়ত্তে আসেনি। স্থানীয়দের অভিযোগ, সঠিক সময়ে দমকল আসেনি। আগুন নেবানোর কাজ সঠিক সময়ে শুরু করা গেলে ক্ষয়ক্ষতি আটকানো যেত।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছোন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। দমকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘একটা গাড়ি আসতে গেলেও তো কিছু সময় লাগে। ওয়াটগঞ্জ, গার্ডেনরিচ থেকে দমকলের গাড়ি এসেছে। জীবন বিপন্ন করে কাজ করেন আমাদের লোকজন। তা ছাড়া, দোকান করার সময়ে অনেকেই ঠিক মতো নিয়ম মানেন না। আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না। একটা ঘটনা ঘটেছে, আমরা দেখব।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত ১টার কিছু পরে খিদিরপুর বাজারে আচমকা আগুন লেগে যায়। ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এলাকার মানুষ ভাল করে বুঝে ওঠার আগেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা বাজারে। স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেবানোর চেষ্টা শুরু করেছিলেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। অভিযোগ, থানা এবং দমকলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু দমকল দেরিতে আসে। আগুন লাগার অন্তত দু’ঘণ্টা পরে তা নেবানোর কাজ শুরু হয়। অভিযোগ, গঙ্গা থেকে পাম্পের মাধ্যমে জল এনে আগুন নেবানোর পরিকল্পনা ছিল দমকলকর্মীদের। কিন্তু সেই ব্যবস্থা করতে গিয়েই অনেকটা সময় কেটে যায়। আরও ছড়িয়ে পড়ে আগুন। এখনও পর্যন্ত খিদিরপুর বাজারে হতাহতের কোনও খবর নেই। তবে বহু সম্পত্তি নষ্টের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বহু দোকান পুড়ে গিয়েছে।
খিদিরপুর বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘প্রশাসন এবং দমকলের চূড়ান্ত ব্যর্থতার খেসারত দিতে হল আমাদের। এখানে ১৩০০ ব্যবসায়ী আছেন। সকলের সব শেষ হয়ে গিয়েছে। ওয়াটগঞ্জ থানা আমাদের ফোনই ধরেনি।’’ আরও এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘দমকল দেরি করে এল। তার পরেও কাজ শুরু করতে পারল না। দমকলের কাছে নাকি জলই নেই! ওদের পাম্পে তেল ছিল না। গঙ্গা থেকে তাই জল তুলতে পারেনি। দোকানগুলি জ্বলছিল, দমকল সামনে দাঁড়িয়েছিল।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজারে তেলের গুদাম ছিল। তার থেকে আগুন আরও বেশি ছড়িয়ে থাকতে পারে।