ফাইনালে শতরান মার্করামের, চোট নিয়েও লড়াই বাভুমার, টেস্ট বিশ্বকাপ জয়ের থেকে ৬৯ রান দূরে দক্ষিণ আফ্রিকা

দরকার আর ৬৯ রান। হাতে ৮ উইকেট। সময় বাকি দু’দিন। বড় অঘটন না ঘটলে, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিততে চলেছে নতুন এক দেশ। তারা দক্ষিণ আফ্রিকা। তৃতীয় দিন দাপট দেখাল টেম্বা বাভুমার দেশ। সহজ হয়ে যাওয়া লর্ডসের পিচে দাপুটে ইনিংস খেললেন বাভুমা এবং এডেন মার্করাম। গত বার অস্ট্রেলিয়া এই প্রতিযোগিতায় জিতেছিল। এ বার দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রফি পাওয়া প্রায় নিশ্চিতই।

লর্ডসের যে পিচে প্রথম দু’দিনে ২৮টি উইকেট পড়েছিল, সেই পিচেই তৃতীয় দিন পড়ল মাত্র চারটি উইকেট। যে ভাবে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে শেষ দিকে লড়াই করলেন মিচেল স্টার্ক এবং জশ হেজ়লউড, তাতে বোঝাই যাচ্ছিল প্রথম দু’দিনের তুলনায় এই পিচ অনেকটাই আলাদা। সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন মার্করাম এবং বাভুমা। অস্ট্রেলিয়ার কোনও বোলারই দাঁত ফোটাতে পারেননি। বাধ্য হয়ে ট্রেভিস হেডের মতো আংশিক সময়ের বোলারকে নিয়ে আসে অস্ট্রেলিয়া। তাতেও লাভ হয়নি।

দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়কের আলাদা করে প্রশংসা প্রাপ্য। ইনিংস চলার মাঝে রান নিতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন হ্যামস্ট্রিংয়ে। তাই নিয়েই লড়াই করে গেলেন অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের বিরুদ্ধে। রান নিতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। খোঁড়াচ্ছিলেন বাভুমা। কিন্তু লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে যাননি।

তবে দিনের শুরুটা এত ভালও হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার। ১৪৪/৮ নিয়ে খেলা শুরু করা অস্ট্রেলিয়ার বাকি দু’টি উইকেট ফেলে দিতে খুব বেশি সময় লাগার কথা ছিল না। তৃতীয় দিনের তৃতীয় ওভারে নেথান লায়ন (২) ফিরিয়ে দেন কাগিসো রাবাডা। তার পরে যে স্টার্ক এবং জশ হেজ়লউড ও ভাবে লড়াই করবেন তা কেউ ভাবতে পারেননি।

একে একে সব বোলারকে নিয়ে এল দক্ষিণ আফ্রিকা। মার্কো জানসেন, উইয়ান মুল্ডার, লুনগি এনগিডি, কেশব মহারাজ— কেউ টলাতে পারছিলেন না দুই ব্যাটারকে। হেজ়লউড একটা দিক ধরে রাখার দিকে মন দিয়েছিলেন। রান তোলার কাজ করছিলেন স্টার্ক। সেটাও খুব সাবধানে। অহেতুক ঝুঁকি নেওয়ার রাস্তায় হাঁটেননি দুই ব্যাটারের কেউই। শেষ পর্যন্ত জুটি ভাঙেন আংশিক সময়ের বোলার মার্করাম। ৫৯ রানের জুটিতে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন স্টার্ক এবং হেজ়লউড। আইসিসির কোনও প্রতিযোগিতার ফাইনালের দশম উইকেটে এটাই সর্বোচ্চ রানের জুটি। তাঁরা ভাঙলেন ১৯৭৫ বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ারই ডেনিস লিলি এবং জেফ থমসনের ৪১ রানের জুটি।

প্রথম ইনিংসে যে দল ১৩৮ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল, তারা ২৮২ রান তাড়া করে জিতবে এমনটা ভাবা যায়নি। শুরুতেই রায়ান রিকেলটনকে (৬) ফিরিয়ে শুরুটা ভাল করেছিলেন মিচেল স্টার্ক। মার্করামের সঙ্গে মুল্ডার জুটি গড়লেও ৬১ রানের বেশি সেই জুটি টেকেনি। তখনও ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার হাতে ছিল। তা আস্তে আস্তে বেরিয়ে গেল মার্করাম এবং বাভুমা জুটি গড়তেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.