পহেলগাঁওয়ের চার ঘাতক কোথায়, এ বার কী পদক্ষেপ, মোদীর ডাকা নৈশভোজে সদুত্তর পেলেন না অভিষেক!

সরকারি সূত্রে খবর ছিল, ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিদেশের ‘প্রতিক্রিয়া’ পর্যালোচনার জন্যই সাতটি বহুদলীয় প্রতিনিধিদলের সদস্যদের নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু মঙ্গলবার সেই নৈশভোজ পর্বকে ‘সময় নষ্ট’ বলে বর্ণনা করেছে তৃণমূল। দলের সর্বোচ্চ সূত্রের খবর, বহুদলীয় প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের টেবিল পর্যন্তও আসেননি প্রধানমন্ত্রী।

সন্ত্রাসবাদের নেপথ্যে পাকিস্তানের ভূমিকা এবং ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর কথা বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে ভারত থেকে সাতটি বহুদলীয় প্রতিনিধিদল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠিয়েছিল মোদী সরকার। এক এক করে গত রবিবার সব ক’টি দলই ভারতে ফিরে এসেছে। তারা কী বলল, আর কী শুনে এল সেই নির্যাস জানতেই ওই দলগুলির প্রতিনিধিদের মোদী মঙ্গলবারের নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে কেন্দ্রের বিভিন্ন সূত্রের দাবি ছিল। কিন্তু তৃণমূলের শীর্ষ পর্যায়ের একটি সূত্র জানাচ্ছে, নৈশভোজে খাওয়া এবং হাসি-মস্করা ছাড়া গঠনমূলক কিছুই হয়নি।

বস্তুত, পুরো বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার বিরক্তিও প্রকাশ করে হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের শীর্ষ পর্যায়ের ওই সূত্রের তরফে। দাবি করা হয়েছে, এক পেয়ালা চা ছাড়া অভিষেক কোনও খাদ্য বা পানীয় স্পর্শ করেননি। সাতটি প্রতিনিধিদলের জন্য মোদীর ৭ লোককল্যাণ মার্গের বাসভবনের আয়োজিত নৈশভোজে সাতটি টেবিলের ব্যবস্থা ছিল। নৈশভোজের পরে ছিল ছবি তোলার ব্যবস্থাও।

মোদী কেন অভিষেকের টেবিল পর্যন্ত এলেন না তারও ব্যাখ্যা মিলেছে অভিষেকের ঘনিষ্ঠ মহলে। পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পরে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট সন্ত্রাস এবং ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর কথা বিশ্বকে জানাতে বহুদলীয় প্রতিনিধিদলের সদস্যদের সকলেও প্রধানমন্ত্রীর দফতর মনোনীত করেছিল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন অভিষেক। প্রসঙ্গত, তৃণমূল নেতৃত্বকে না-জানিয়ে বহরমপুরের সাংসদ ইউসুফ পাঠানকে তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসাবে রাখায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন মমতা এবং অভিষেক। তাঁরা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, কেন্দ্র বা পক্ষান্তরে শাসকদল বিজেপি ঠিক করতে পারে না তৃণমূলের তরফে কে যাবেন। তা দলই ঠিক করবে।

এর পরে গত ২০ মে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু মমতাকে ফোন করলে অভিষেকের নাম প্রস্তাব করেছিলেন মমতাই। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক যে দলে ছিলেন, সেটি গিয়েছিল এশিয়ার পাঁচটি দেশে— জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কুয়ালা লামপুর, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া। ১৫ দিনের সফর শেষে গত মঙ্গলবার রাত ১২টা ১৫ মিনিট নাগাদ কলকাতায় পৌঁছোন অভিষেক। এর পরে সোমবার রিজিজুর দফতর থেকে ফোন এসেছিল অভিষেকের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে। অভিষেকের দফতর থেকে সরকারি ভাবে জানানো হয়েছিল, মঙ্গলবারের বৈঠকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে নৈশভোজে যোগ দেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.