আক্রমণ করতেই পারে রাশিয়া, আশঙ্কা জার্মানির! ইউক্রেনের মদতদাতা দেশে বোমানিরোধক বড় বড় বাঙ্কার তৈরির সিদ্ধান্ত

রাশিয়া-ইউক্রেনের সামরিক সংঘাতের প্রেক্ষাপটে হামলার আশঙ্কা করেছে জার্মানিও। রাশিয়া যে কোনও সময় হামলা চালাতে পারে, এমন আশঙ্কা করেই ইউরোপের এই দেশে বোমানিরোধক বাঙ্কার এবং আশ্রয়স্থল আরও বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা হচ্ছে। জার্মানির ফেডেরাল অফিস অফ সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড ডিজ়াস্টার অ্যাসিসট্যান্স-এর প্রধান র‌্যাল্ফ টাইসলার জানিয়েছেন, চার দিকে যে সামরিক সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে, এই পরিস্থিতি যদি লাগাতার চলতে থাকে, তা হলে তার আঁচ জামার্নিতে এসে পড়বে না, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই।

যদি ভয়াবহ যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা হলে এই যুদ্ধের আঁচ থেকে নাগরিকদের বাঁচাতে জার্মানির আরও প্রস্তুতি প্রয়োজন। এক সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘ সময় ধরে জামার্নিতে একটা ধারণা তৈরি হয়েছিল যে, যুদ্ধ বাধলে তার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে তাদের। কিন্তু এখন সেই ধারণা বদলাতে হবে। যে কোনও সময়ে ইউরোপে হামলা হতে পারে, এই আশঙ্কা কিন্তু অমূলক নয়।’’

টাইসলার তাই মনে করেন, যুদ্ধ বাধলে যাতে নাগরিকদের সুরক্ষিত রাখা যায়, তার জন্য দেশ জুড়ে আরও প্রচুর সংখ্যক বোমানিরোধক বাঙ্কার এবং আশ্রয়স্থল তৈরি করা উচিত। তার জন্য সুড়ঙ্গ, মেট্রো স্টেশন, ভূগর্ভস্থ গ্যারাজগুলিকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। দেশে যে সংখ্যক বাঙ্কার রয়েছে, তা পর্যাপ্ত নয়। নতুন বাঙ্কার তৈরি করা যেমন সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, তেমনই খরচসাপেক্ষও বটে। তবে সেই সব কিছু বিবেচনা করেই প্রস্তুতি নেওয়া উচিত বলে মনে করেন টাইসলার। কারণ, পরিস্থিতি যে দিকে মোড় নিচ্ছে, ইউরোপে সেই আঁচ যে অচিরেই পড়বে তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশও করেছেন তিনি।

টাইসলারের তথ্য অনুযায়ী, জার্মানিতে এই মুহূর্তে ২০০০ বাঙ্কার এবং আশ্রয়স্থল রয়েছে, যার মধ্যে ৫৮০টির অবস্থা ভাল। সেখানে ৪ লক্ষ ৮০ হাজার লোক আশ্রয় নিতে পারবেন। তুলনায় ফিনল্যান্ডে রয়েছে ৫০ হাজার বাঙ্কার।

প্রসঙ্গত, যুদ্ধক্ষেত্রে সরাসরি না নামলেও ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার পুরোদস্তুর আক্রমণের পর থেকে জার্মানি অস্ত্রসাহায্য করে আসছে কিভকে। ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের পুরোদস্তুর অস্ত্রসাহায্য যে মস্কো ভাল ভাবে নিচ্ছে না সেটাও জানে বার্লিন। কিন্তু রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তা করার পথ থেকে তাঁরা সরে আসবেন না বলেও জানিয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রেডরিক মার্জ। ইউক্রেনকে ক্রমাগত সাহায্য পাঠিয়ে জার্মানি যে রাশিয়ার বিরাগভাজন হয়ে উঠছে, তা এক প্রকার স্পষ্ট। আর তা থেকেই জার্মানির ফেডেরাল অফিস অফ সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড ডিজাস্টার অ্যাসিসট্যান্স-এর প্রধান টাইসলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, আগামী চার বছরের মধ্যে যে কোনও সময়ে রাশিয়া হামলা করতে পারে। তাই সেই পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া উচিত বলে মত তাঁর। এই বিষয়টি তিনি সরকারের অন্দরে উত্থাপন করবেন বলেও জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.