১ এপ্রিল থেকে হাওড়ার আরও ১৪ ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা হবে আবর্জনা, ফেলা হবে ধাপায়

হাওড়াবাসীর জঞ্জাল-যন্ত্রণা কিছুটা হলেও কমছে। এখন থেকে হাওড়া শহরের আবর্জনা ধাপার মাঠেই নিয়মিত ফেলা হবে। রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে হাওড়ার পুর দফতরে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে তেমন সিদ্ধান্তই হয়েছে। মুখ্য পুর প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, হাওড়া পুর এলাকার আরও ১৪টি ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহের কাজ শুরু হবে ১ এপ্রিল থেকে। তার পর বাকি ওয়ার্ডেও সেই পরিষেবা চালু হবে।

হাওড়া পুর এলাকার ১১টি ওয়ার্ডের বাড়ি থেকে এখন আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়। সুজয় জানিয়েছেন, ১ এপ্রিল থেকে আরও ১৪টি ওয়ার্ডে সেই পরিষেবা চালু হবে। অর্থাৎ তখন মোট ২৫টি ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ময়লা তোলার ব্যবস্থা করা হবে। হাওড়া পুরসভার বাকি ২৫ টি ওয়ার্ডেও তার পরে এই পরিষেবা চালু হবে। বৃহস্পতিবার হাওড়ার মুখ্য পুর প্রশাসক সুজয়ের সঙ্গে পুর দফতর এবং রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকদের একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। বৈঠকে স্থির হয়, হাওড়া শহরের সমস্ত আবর্জনা এখন কলকাতার ধাপার মাঠেই নিয়মিত ফেলা হবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য দেবে রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতর। ময়লা তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য আরও বেশি সংখ্যক ডাম্পার নামানো হবে। এই কাজের জন্য হাওড়া পুরসভার কর্মীসংখ্যাও বৃদ্ধি করা হবে। এ ছাড়াও হাওড়ার রাস্তা থেকে আরও দ্রুত আবর্জনা তুলতে পুরসভাকে ২০টি মোবাইল কমপ্যাক্টর, ৩৪টি ট্রিপার ভ্যান দিচ্ছে সুডা। এ ছাড়া একাধিক রাস্তাও সুডার তরফে দ্রুত মেরামত করে দেওয়ার বিষয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বেলগাছিয়ায় ভাগাড় এলাকা পরিদর্শনে যান কলকাতার প্রাক্তন মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘এটি কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং প্রশাসনিক ব্যর্থতার ফল। দীর্ঘ দিন ধরে ভাগাড়ের জমি ক্রমাগত বসে যাচ্ছে, অথচ সরকারের কোনও হেলদোল নেই। আজ তারই পরিণতিতে এই ধস।’’ তিনি আরও জানান, মানুষ এখানে ভয়াবহ পরিবেশে বসবাস করছে। এক দিকে ভাগাড়ের দুর্গন্ধ, অন্য দিকে মাটির নীচে জমি ফাঁপা হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বিকাশ বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী লন্ডনে গিয়ে আনন্দ করছেন! এটাই কি মানুষের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতা?’’ ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন না দিলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার কথাও জানিয়েছেন বিকাশ।

বেলগাছিয়ার ভাগাড়ে ধসের জেরে ঘরছাড়া হয়েছে ২৬০টি পরিবার। বাকি পরিবারগুলিও ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ঘরছাড়াদের আবাস যোজনার মাধ্যমে পাকা বাড়ি করে দেওয়া হবে। তবে ওই এলাকায় স্থায়ী নির্মাণকাজ শুরুর আগে মাটি পরীক্ষা বা ‘সয়েল টেস্ট’ করে নিতে চাইছে প্রশাসন। সে ক্ষেত্রে এলাকাটির মাটি ভারী কোনও নির্মাণকাজের ভার বহন করতে সক্ষম কি না, তা বোঝা যাবে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাজ্যের পুর নগরোন্নয়ন দফতরের সঙ্গে বৈঠকে বসে হাওড়া পুরসভা। সেখানে একাধিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.