Dhananjoy Chattopadhyay, President, ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মামলা পুনর্বিচারের দাবি গৃহীত হলো রাষ্ট্রপতি ভবনে

 আর জি কর মামলার বিচার প্রক্রিয়া কলকাতা হাইকোর্টে পুনরায় শুরু হওয়ার আগে কনভেনর ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মামলা পুনর্বিচার মঞ্চের সদস্যরা দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে নিজের হাতে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মামলা পুনর্বিচারের আবেদন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর দপ্তরে জমা দিলেন।

এর আগে এই সংগঠনের সদস্যরা ধনঞ্জয় মামলা পুনর্বিচারের দাবিতে জনআন্দোলন শুরু করেছেন। তারা ইতিমধ্যেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং কারা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার কাছে ডেপুটেশন দিয়েছেন মামলা পুনর্বিচারের সহযোগিতা চেয়ে। ডাকযোগে ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছেও ডেপুটেশন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এবার এই মঞ্চের সদস্যরা দিল্লি গিয়ে বিশেষ অনুমতি করিয়ে একেবারে রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর দপ্তরে গিয়ে ডেপুটেশন জমা দিয়ে এই মামলার পুনর্বিচার আবেদন করলেন। ভারতে এর আগে কখনও এই রকম কোনো মামলার পুনর্বিচার হয়নি বা পুনর্বিচার চেয়ে এতবড় আন্দোলন হয়নি। সঠিক তথ্য জানতে চেয়ে এই মঞ্চে ফাঁসুরে নাটা মল্লিকের পরিবারের সদস্যদের যোগদান এই আন্দোলনে বিশেষ মাত্রা যুক্ত করেছে।

কনভেনর ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বক্তব্য, এই মামলার পুনর্বিচার হলে আমরা একশ শতাংশ নিশ্চিত ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে আমরা নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবো। কারণ, ১৯৯০ সালে ঘটনার প্রথম এফ আই আর কপি থেকে ফাঁসি হওয়া পর্যন্ত সমস্ত তথ্য ও কোর্ট কেসের কাগজ অনেক কষ্ট করে আমি জোগাড় করেছি এবং এই মুহূর্তে সমস্ত তথ্য আমাদের হাতে আছে যা প্রমাণ করবে ধনঞ্জয়বাবু নির্দোষ ছিলেন। মূলত আসল অপরাধীকে আড়াল করার জন্য দরিদ্র পুরোহিত ঘরের সন্তান ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি আসলে রাজনৈতিক খুন এবং আইন ব্যবস্থার দুর্বলতার সুযোগে বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যের অতি সক্রিয়তার কারণে বলির পাঁঠা হয়েছেন ধনঞ্জয়। আসল অপরাধীকে আড়াল করার ফলে ইনজাস্টিস হয়েছে হেঁতাল পারেখের সঙ্গেও। একজন নিরপরাধ মানুষকে ফাঁসি দিতে বাধ্য করে নাটা মল্লিককেও পাপের ভাগী করা হয়েছে। আজ অনেকেই ভাবতে পারেন, মৃত্যুর এতদিন পর ধনঞ্জয় নির্দোষ প্রমাণিত হলে কী লাভ হবে? আসলে কোনো দোষ না করে ধনঞ্জয়, তাঁর পরিবারের সদস্যদের কুলোডিহি গ্রাম ও বাঁকুড়া জেলার মানুষদের আজও একজন ধর্ষকের পরিচয় বহন করতে হচ্ছে যা এক কথায় একটি নারকীয় সামাজিক অপরাধ। এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে প্রমাণ করে কোনো ব্যক্তিকে মৃত্যু দন্ডের মত চূড়ান্ত শাস্তি দেওয়ার আগে অবশ্যই বিচার ব্যবস্থাকে ত্রুটিহীন হতে হবে।

এই মঞ্চের আরেক সদস্যা অনামিকা মন্ডলের বক্তব্য, একটি ত্রুটিহীন নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা এবং অপরাধমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা গঠনের জন্য অবশ্যই ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় কেসটি রিওপেন হওয়া প্রয়োজন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু কেসটি পুনর্বিচারের অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি ভবনেই এই আন্দোলনকে আরো তীব্রতর করার শপথ গ্রহণ করলেন ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মামলা পুনর্বিচার মঞ্চের সদস্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.