ভারতীয় দলের সবচেয়ে সিনিয়র দুই ক্রিকেটার তাঁরা। অথচ দল জেতার পর শিশুর মতো আনন্দ করতে দেখা গেল তাঁদের। ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতার পরেই অভিনব উল্লাস করলেন রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। ডান্ডিয়া নাচতে দেখা গেল তাঁদের। ভারতের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিয়ে নিশ্চিন্ত কোহলি।
ভারতের জয়ের কিছু ক্ষণ আগে থেকেই রোহিত ও কোহলিকে দেখা যাচ্ছিল, সাজঘরে বসে থাকতে পারছেন না তাঁরা। মাঠে নামার জন্য তৈরি। রবীন্দ্র জাডেজার শট বাউন্ডারির বাইরে চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সহকারী কোচ অভিষেক নায়ার ও প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরকে জড়িয়ে ধরেন কোহলি। মাঠে তখন একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছেন জাডেজা ও লোকেশ রাহুল। সকলের আগে মাঠে দৌড়ে যান বরুণ চক্রবর্তী, হর্ষিত রানা ও অর্শদীপ সিংহ। জাডেজা ও রাহুলের সঙ্গে উল্লাস শুরু করেন তাঁরা। হাসি দেখা যায় গম্ভীরের মুখে।
গম্ভীর, কোহলি ও রোহিত মাঠে নামেন। নিউ জ়িল্যান্ডের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলানোর পর মাঠে উল্লাস শুরু করেন তাঁরা। দু’টি উইকেট হাতে তুলে নেন রোহিত ও কোহলি। তার পরেই শুরু হয় তাঁদের নাচ। উইকেট দু’টি কাজে লাগিয়ে ডান্ডিয়া নাচতে শুরু করেন তাঁরা। ন’মাস আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পর দেশে ফিরে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে এই ভাবেই নেচেছিলেন দুই ক্রিকেটার। হর্ষিত, জাডেজা ও অর্শদীপও নাচেন। দলের সাপোর্ট স্টাফেরাও উল্লাসে যোগ দেন।
মাঠে নামেন রোহিত ও কোহলির পরিবারও। ডাগ আউটের পাশে অনুষ্কা শর্মার সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় কোহলিকে। হাসিমুখে কথা বলছিলেন তাঁরা। ২০২৩ সালে এক দিনের বিশ্বকাপের ফাইনালের হারের পর কোহলিকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন অনুষ্কা। এ বার কোহলির সাফল্য সমান ভাগে ভাগ করে নিলেন তিনি। মাঠে নামেন রোহিতের স্ত্রী রীতিকা সজদে ও কন্যা সামাইরাও। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার সময়ও রীতিকা মাঠে ছিলেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতার সময়ও থাকলেন তিনি।
চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোহলির মুখে শোনা গেল তরুণ প্রজন্মের কথা। দলে যে প্রতিভা রয়েছে তাতে নিশ্চিন্ত তিনি। কোহলি বলেন, “সাজঘরে প্রচুর প্রতিভা রয়েছে। ওরা ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা খালি ওদের পথ দেখিয়ে দিচ্ছি। আমাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিচ্ছি। ওদের জন্যই এই দলকে এত শক্তিশালী দেখাচ্ছে।”
এই জয়ের কৃতিত্ব দলের সকলকে দিয়েছেন কোহলি। যে ভাবে প্রত্যেকে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন তার প্রশংসা শোনা গিয়েছে কোহলির মুখে। তিনি বলেন, “কঠিন পরিস্থিতিতে সকলে মিলে ম্যাচ জিততে হয়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আমরা সেটাই দেখিয়েছি। প্রত্যেকে নিজের কাজ করেছে। দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছে। আমরা অনুশীলনে পরিশ্রম করেছি। সেটা ম্যাচে দেখা গিয়েছে।”
কেরিয়ারের শেষ দিকে পৌঁছেছেন কোহলি। আর কত দিন ভারতের জার্সিতে তাঁকে দেখা যাবে তা নিয়ে বার বার জল্পনা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দলের তরুণ প্রজন্মকে দেখে খুশি কোহলি। দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিশ্চিন্ত তিনি। কোহলি বলেন, “যখন আপনি ছাড়তে চান, আপনি চেষ্টা করেন দলকে ভাল জায়গায় নিয়ে গিয়ে ছাড়তে। দলের ভবিষ্যৎ ভাল হাতে রয়েছে। আমাদের যা দল তাতে আগামী ৮ থেকে ১০ বছর ক্রিকেট শাসন করার জন্য আমরা তৈরি।”
নিউ জ়িল্যান্ডের মতো কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জেতা সহজ ছিল না। কোহলি জানিয়েছেন, নিউ জ়িল্যান্ডই তাঁদের সবচেয়ে বেশি সমস্যা ফেলেছেন। কিন্তু সেই সমস্যা কাটিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তাঁরা। দলের কারও নাম আলাদা করে নিতে চাননি কোহলি। বোলার ও ব্যাটারদের সমান কৃতিত্ব দিয়েছেন তিনি।