পাক ক্রিকেট ‘এগোচ্ছে’ হকির পথেই! আক্ষেপ মিয়াঁদাদেরও, কারণ খুঁজল আনন্দবাজার অনলাইন

১৯৮২ সালের এশিয়ান গেমস। দিল্লির মাঠে মীররঞ্জন নেগির ভারতীয় দলকে ৭-১ গোলে হারিয়েছিল পাকিস্তান। একটা ম্যাচ অনেক খেলোয়াড়ের কেরিয়ার শেষ করে দিয়েছিল। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত ভারতের উপর আধিপত্য চালিয়েছে পাকিস্তান। এখনও মুখোমুখি সাক্ষাতে এগিয়ে পাকিস্তান। কিন্তু গত ন’বছরে ছবিটা বদলে গিয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে ভারতকে এক বারও হারাতে পারেনি পাকিস্তান। সেই একই হাল পাকিস্তানের ক্রিকেটেও। কেন এই দুই খেলা ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে? কারণ খুঁজল আনন্দবাজার অনলাইন।

হকির উত্থান

স্বাধীনতার সময় ভাগ হয়ে গিয়েছিল পঞ্জাব প্রদেশ। সেই সময় হকি খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, একটি দেশ বেছে নেওয়ার। সেই সময় যাঁরা দলে খেলতেন তাঁদের মধ্যে আলি দারা, পিটার ফের্নান্দেস, লতিফ উর রহমান, আখতার হুসেন-সহ বেশির ভাগ খেলোয়াড় বেছে নিয়েছিলেন পাকিস্তান। সে দেশে নতুন হকি ফেডারেশন তৈরি হয়। পশ্চিম পঞ্জাব, সিন্ধ, বালোচিস্তান, খাইবার-পাখতুনখোয়া ও ভাওয়ালপুর থেকে খেলোয়াড়দের নিয়ে তৈরি হয় দল। পরের প্রায় ৪০ বছর দাপট দেখায় পাকিস্তান।

hockey

অলিম্পিক্সে তিনটি সোনা-সহ মোট আটটি পদক জিতেছে পাকিস্তান। সবচেয়ে বেশি চার বার হকির বিশ্বকাপও জিতেছে তারা। আট বার এশিয়ান গেমস, তিন বার করে এশিয়া কাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও দখল করেছে তারা। বেশির ভাগ ১৯৯০ সালের আগে। ১৯৯০ সালের পর একটি বিশ্বকাপ ও একটি এশিয়ান গেমস ছাড়া বড় কৃতিত্ব নেই পাকিস্তানের। তার পরেও অবশ্য সোহেল আব্বাস, রেহান বাটের মতো খেলোয়াড় পাকিস্তান তৈরি করেছে। কিন্তু আর সোনার দল তৈরি হয়নি। দিন দিন পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে গত তিনটি অলিম্পিক্স খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি পাকিস্তান। ২০১৪ ও ২০২৩ সালের হকি বিশ্বকাপেও সুযোগ পায়নি চার বারের চ্যাম্পিয়ন দল। এখন হকিতে পাকিস্তানের র‌্যাঙ্কিং ১৬।

হকির পতন

ঠিক কবে থেকে পতন শুরু হল পাকিস্তান হকির? পিছিয়ে যেতে হবে ৩৯ বছর আগে। ১৯৮৬ সালে বিশ্ব হকি ফেডারেশন ঠিক করে, হকির সব ম্যাচ হবে অ্যাস্ট্রোটার্ফে। তার আগে খেলা হত ঘাসের মাঠে। সেখানে ভারত ও পাকিস্তান দাপট দেখাত। তাদের সামনে ইউরোপীয় দলগুলি সমস্যায় পড়ত। কিন্তু হকির টার্ফ বদলে যাওয়ার পরে সমস্যা হয় এশিয়ার দুই দেশের। খেলোয়াড়েরা তো ঘাসের মাঠে খেলতে অভ্যস্ত। অ্যাস্ট্রোটার্ফে বলের গতি অনেক বেড়ে গেল। ফলে ঘাসের মাঠে অনুশীলন করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অ্যাস্ট্রোটার্ফে খেলতে সমস্যা হল ভারত ও পাকিস্তানের।

ভারত ধীরে ধীরে এই সমস্যার মোকাবিলা করেছে। ঘাসের মাঠের বদলে অ্যাস্ট্রোটার্ফ এসেছে। সরকারি সাহায্য মিলেছে। বিশেষ করে গত দুই দশক ধরে ওড়িশা সরকার ভারতীয় হকির উন্নতির জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। ভুবনেশ্বরে প্রচুর অ্যাস্ট্রোটার্ফ হয়েছে। বিদেশি কোচ এসেছেন। কিন্তু পাকিস্তান থেকে গিয়েছে পাকিস্তানেই। সেখানে উন্নতি হয়নি। তার বড় কারণ, সে দেশের আর্থিক অবস্থা। দেশের বাজেটের খুব কম অংশই দেওয়া হয় হকির উন্নতির জন্য। ফলে ঘরোয়া হকির মান কমেছে। হকি খেলার খরচ জোগাতে হিমশিম খান খেলোয়াড়ের। ফলে আগ্রহ কমেছে। এমনটাই মনে করেন বাংলার প্রাক্তন হকি খেলোয়াড় গুরবক্স সিংহ। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বললেন, “প্রধান সমস্যা টাকা। পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থা খারাপ। হকিতে বিনিয়োগ নেই। ভাল টার্ফ তৈরি হয় না। শিবির হয় না। মাঝে কয়েক জন বিদেশি কোচ পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। কিন্তু বেতন না পেয়ে ছেড়ে চলে এসেছেন। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে হকি খেলোয়াড় আসবে? কী ভাবে হকির উন্নতি হবে?”

অ্যাস্ট্রোটার্ফের সমস্যায় তো পড়েছে ভারতও। ১৯৮০ সালের পর থেকে অলিম্পিক্সে পদক ছিল না। বার বার ব্যর্থতা। কিন্তু তার পরেও এই খেলার আগ্রহ কমেনি। তার একটা কারণ অবশ্যই স্পনসর। সেই সময়ও ভারতে হকির লিগ হয়েছে। নতুন খেলোয়াড় উঠে এসেছে। তবে কি আর্থিক সমস্যাই পাকিস্তানের হকির পতনের আসল কারণ? আরও একটি কারণেই কথা জানালেন ধ্যানচন্দের পুত্র প্রাক্তন হকি খেলোয়াড় অশোক কুমার। তিনি বললেন, “ভারতও তো ৪১ বছর পর অলিম্পিক্সে পদক পেয়েছে। কিন্তু ওই ৪১ বছরে হকির মান তো কমেনি। তার কারণ, হকির প্রতি ভালবাসা একই ছিল। হকির উন্নতির চেষ্টা হয়েছে। এই ভালবাসাটাই এখন আর পাকিস্তানে নেই। বাবা-মা ছেলে-মেয়েকে হকিতে পাঠাচ্ছে না। তার ফলেই দেশের জাতীয় খেলার এই হাল।”

হকির জায়গা নিল ক্রিকেট

১৯৯০-এর পর ঠিক যে সময় পাকিস্তানের হতির পতন শুরু, সেই সময় উত্থান সে দেশের ক্রিকেটের। ১৯৯২ সালে ইমরান খানের পাকিস্তান বিশ্বকাপ জেতার পর সেখানে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা এক লাফে অনেকটা বেড়ে যায়। সংবাদমাধ্যমের আগ্রহও হকি থেকে ধীরে ধীরে ক্রিকেটের দিকে চলে যায়। ক্রিকেটে টাকা আসতে শুরু করে। আইসিসির অনুদানের পাশাপাশি অনেক স্পনসর আসে। ফলে পাকিস্তানের ক্রিকেট ধীরে ধীরে উন্নত হতে শুরু করে। বাচ্চারা হকি স্টিকের বদলে হাতে তুলে নেয় ব্যাট-বল। হকির জায়গা নিয়ে নেয় ক্রিকেট। সোহেল আব্বাসদের বদলে ওয়াসিম আক্রম, ওয়াকার ইউনিস, শোয়েব আখতার, ইনজ়ামাম উল হকেরা তরুণদের আদর্শ হয়ে ওঠেন। একটা দেশে নিজের হকির শিকড় ছিঁড়ে ক্রিকেটের বিনোদনে মেতে ওঠে।

cricket

ক্রিকেটের এই আধিপত্যের ফলেই পাকিস্তানের হকির মান আরও কমে। শেষ ১৫ বছরে ভারত ও পাকিস্তান হকিতে মুখোমুখি হয়েছে ৩৯ বার। ভারত জিতেছে ২৬টি ম্যাচ। পাকিস্তান মাত্র ন’টি। যে পাকিস্তান এক সময় ভারতের উপর আধিপত্য দেখাত, সেই দল গত ন’বছরে ভারতকে এক বারও হারাতে পারেনি। ১-৭ হারের বদলা ২০১৬ সালে আজলান শাহ হকি প্রতিযোগিতায় নিয়েছে ভারত। ২০২২ সালে এশিয়ান গেমসে ১০-২ গোলে পাকিস্তানকে হারিয়েছে তারা, যা দুই দলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়।

ক্রিকেটের হাল হকির মতো হল কেন?

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, হকিকে সরিয়ে যে খেলা পাকিস্তানের মুখ হয়ে উঠল তার হাল কেন এত খারাপ? ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল পাকিস্তান। ভারতকে হারিয়ে। সেটাই পাকিস্তানের শেষ কোনও আইসিসি ট্রফি জয়। তার পর থেকে তাদের সেরা পারফরম্যান্স ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা। ২০২৩ সালের এক দিনের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয়েছে তাদের। চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ঘরের মাঠে সকলের আগে বিদায় নিয়েছে পাকিস্তান। নিউ জ়িল্যান্ড ও ভারতের কাছে হেরেছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলা ভেস্তে গিয়েছে। অর্থাৎ, একটি ম্যাচও জিততে পারেনি পাকিস্তান। ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শেষ বার ভারতকে হারিয়েছিল পাকিস্তান। তার পর পাঁচ বারের সাক্ষাতে পাঁচ বারই হেরেছে তারা। তার ফলে ক্রিকেটারদের জনপ্রিয়তা কমছে। পাকিস্তানে খেলাধুলোয় এখন তারকা হিসাবে এক জনই রয়েছেন। অলিম্পিক্সে দেশকে জ্য়াভলিনে সোনা এনে দেওয়া আরশাদ নাদিম। সেই নাদিমও কিন্তু দেশের কাছে কোনও সুবিধা পাননি। নিজের পরিশ্রমে সফল হয়েছেন তিনি।

cricket

এই পরিস্থিতিতে সমালোচনা শুরু হয়েছে পাকিস্তানের অন্দরেই। দেশের প্রাক্তন অলরাউন্ডার মুদস‌্সর নজ়রের মতে, পাকিস্তানের হকির পথেই চলেছে ক্রিকেট। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চলাকালীনই দুবাইয়ে বসে তিনি বলেন, “সত্তর-আশির দশকে পাকিস্তানে হকি খুব জনপ্রিয় ছিল। ক্রিকেট ম্যাচের বদলে ভারত-পাকিস্তান হকি ম্যাচের সম্প্রচার হত। কিন্তু তার পর কী হল? দল হারতে শুরু করায় হকির প্রাক্তন খেলোয়াড়েরাই সমালোচনা শুরু করল। তারা নিজেদের আখের গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করল। তার প্রভাব খেলায় পড়়ল। দেখুন, আমাদের হকি এখন কোথায় নেমে গিয়েছে।”

cricket

ক্রিকেটও সেই পথেই এগোচ্ছে বলে মনে করেন মুদস্‌সর। এর একটা প্রধান কারণ ঘরোয়া ক্রিকেট। এক সময় লাহোরের জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির কোচ ছিলেন মুদস‌্সর। সেই অ্যাকাডেমি খাতায়-কলমে থাকলেও তা কার্যকরী নয়। একই হাল করাচি, মুলতান ও রাওয়ালপিন্ডির অ্যাকাডেমির। ঘরোয়া ক্রিকেটের খারাপ হাল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কি নজরে পড়ে না? মুদস্‌সর বলেন, “হকির হাল হবে ক্রিকেটেরও। প্রাক্তন ক্রিকেটারেরা সকলে এখন আখের গোছানোর চেষ্টা করছে। কারও খেলার দিকে আগ্রহ নেই। আইসিসি টাকা দিচ্ছে। সেই টাকা কোথায় যাচ্ছে।” লাহোরের ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ঠিক পাশেই রয়েছে হকির স্টেডিয়াম। শেষ বার কবে সেখানে খেলা হয়েছিল, মনে পড়ছে না। ক্রিকেট পাকিস্তানে ফিরেছে অনেক বছর পর। কিন্তু দল যে ভাবে খেলছে তাতে এই স্টেডিয়ামের হালও হকি স্টেডিয়ামের মতো না হয়?

ভারতই কি দায়ী?

হকির মতো ক্রিকেটেও ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের ছবি বদলেছে। আগে যেখানে পাকিস্তান দাপট দেখাত, সেখানে এখন ভারত দেখাচ্ছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের আর্থিক ক্ষমতা এর নেপথ্যে রয়েছে। আর একটা কারণ অবশ্যই আইপিএল। মুদস‌্সর বলেন, “আইপিএল থেকে টাকা আসছে। সেই টাকা ঘরোয়া ক্রিকেটের উন্নতিতে কাজে লাগাচ্ছে বিসিসিআই। আমরা যখন জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমি তৈরি করেছিলাম, তখন ভারতীয় ক্রিকেটারেরাও তার প্রশংসা করেছিল। এখন সেই অ্যাকাডেমি বন্ধ। ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান পাকিস্তানের থেকে অনেক উন্নত। সেই কারণেই ভারত দাপট দেখাচ্ছে।”

cricket

আইপিএলের কথা শোনা গেল গুরবক্সের কথাতেও। ক্রিকেটার না হলেও ভারতের ক্রিকেট নিয়ে খবর রাখেন তিনি। সেই গুরবক্স বললেন, “ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের টাকার কাছে কেউ পেরে উঠছে না। বাবা-মায়েরা ভাবছে ছেলে এক বছর আইপিএল খেলতে পারলেই কোটিপতি হয়ে যাবে। আর যদি আইপিএলে নজর কাড়তে পারে তা হলে ভারতীয় দলেও সুযোগ পাবে। তাই ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। এত ক্রিকেটার উঠে আসছে। পাকিস্তানের ছেলেদের তো সেই আগ্রহই নেই। হকির মতো ক্রিকেটেও টাকার অভাব। সেই কারণেই ক্রিকেটের মান দিন দিন নামছে।”

টাকাই সব নয়

শুধুই কি টাকা? পাকিস্তান ক্রিকেটে টাকার থেকেও খেলার প্রতি উৎসাহ ও ভালবাসা একটা সময় অনেক উপরে ছিল। এই দেশই তো জাভেদ মিয়াঁদাদ, শাহিদ আনোয়ার, শাহিদ আফ্রিদির মতো ক্রিকেটার তৈরি করেছে। বিদেশি কোচ ছাড়াই ম্যাচ জিতেছে। গত কয়েক বছরে সেই ছবিটা বদলে গিয়েছে। গত চার বছরে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান চার বার বদলেছে। আর যত বার মাথা বদলেছে তত বার কোচিং স্টাফ থেকে শুরু করে অধিনায়ক, সব বদলে গিয়েছে। কেউ থিতু হতেই পারেননি। যে বিদেশি কোচেরা এসেছেন তাঁরা কয়েক মাস পরেই চলে গিয়েছেন। বোর্ড ও দলের রাজনীতিকে দায়ী করেছেন তাঁরা।

এই রাজনীতির মধ্যে ঢুকতে চাননি পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা কোচ মিয়াঁদাদ। তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “ঘরোয়া ক্রিকেটের মান উন্নত করতে হবে। সকলকে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে হবে। যত দিন না সেটা হচ্ছে, তত দিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাফল্য আসবে না। আর বিদেশি কোচের দরকার আমাদের নেই। দেশীয় কোচের উপর ভরসা রাখতে হবে।”

cricket

মিয়াঁদাদেরা যখন খেলতেন তখন তাঁদের ১০০ শতাংশ মাঠেই দিতেন। সে প্রতিপক্ষ চেতন শর্মাই হোন, বা কিরণ মোরে। শারজায় ভারতের বিরুদ্ধে শেষ বলে চেতনকে ছক্কা মেরে পাকিস্তানকে জিতিয়েছিলেন মিয়াঁদাদ। সেই স্মৃতি ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে টাটকা। দেশের প্রতি সেই ভালবাসা এখনকার পেশাদার ক্রিকেটারদের কতটা রয়েছে? বার বার একই ভুল থেকে শিক্ষা নেন না তাঁরা। ফিটনেসের দিকে কারও নজর নেই। দেশের জেতার কথা কি মাথায় রাখে ক্রিকেট বোর্ডও? নইলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যে দল পাকিস্তান নির্বাচন করেছে তার সমালোচনা সেখানকার প্রত্যেক প্রাক্তন ক্রিকেটার করেছেন। আক্রম, ওয়াকার, আখতার থেকে শুরু করে শোয়েব মালিক, ইউনুস খানেরা রয়েছেন সেই তালিকায়। দল ব্যর্থ হতেই আবার খোলনলচে বদলে ফেলার কথা শোনা যাচ্ছে। কোচ আকিব জাভেদকে ছাঁটাইয়ের কথা শোনা যাচ্ছে। অর্থাৎ, সেই পুরনো গল্প। ব্যর্থতার দায় কোচ অথবা অধিনায়কের উপর চাপিয়ে দায় ঝেরে ফেলা। এই মানসিকতাই কি পাকিস্তানের ক্রিকেটকে ক্রমশ নামাচ্ছে। যে মানসিকতার এক সময় হকিকে সরিয়ে ক্রিকেটকে দেশের প্রধান খেলা তৈরি করেছিল, সেই মানসিকতাই কি প্রধান শত্রু? সেই কারণেই কি ধীরে ধীরে হকির পথেই এগিয়ে চলেছে পাকিস্তান ক্রিকেট?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.