আবারও উত্তেজনা ছড়াল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ বার গ্রেডকার্ড (পরীক্ষার ফলাফল) বিকৃত করার অভিযোগ উঠল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পড়ুয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বৃত্তি (স্কলারশিপ) পাওয়ার জন্য ‘দুর্নীতির আশ্রয়’ নেন পড়ুয়ারা। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত স্কলারশিপ আটকে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এর পরেই পড়ুয়াদের একাংশ তাঁদের দাবি নিয়ে কথা বলতে যান উপাচার্যের সঙ্গে। স্কলারশিপ আটকে যাওয়ায় অস্থায়ী উপাচার্যকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের একাংশ। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে স্কলারশিপের ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও পড়ুয়াদের দাবি শুনতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, কয়েক দিন আগে দু’জন ছাত্রের সরকারি ওয়েবসাইটে আপলোড করা গ্রেডকার্ড দেখে সন্দেহ হয় আধিকারিরদের। এর পর দু’জনের নথি পরীক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরত পাঠানো হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের দুই পড়ুয়ার নম্বর বদলের অভিযোগ ওঠে। এর পর বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়টি বিকাশ ভবনকে জানায়। এখনও পর্যন্ত ৪০ জনের নাম সামনে এসেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার পরেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন যে, এ বার থেকে প্রত্যেক পড়ুয়ার গ্রেডকার্ড যাচাই করা হবে। সেই মতোই তাঁরা বৃত্তি পাবেন। আপাতত পড়ুয়াদের বৃত্তি আটকে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়।
ভাস্কর জানান, প্রতি ছ’মাস অন্তর সেমেস্টার পরীক্ষা হয়। সেই পরীক্ষার গ্রেডকার্ডের ফলাফলের ভিত্তিতে পড়ুয়ারা বৃত্তি পেয়ে থাকেন। অভিযোগ, সেই বৃত্তি পাওয়ার জন্য অনেক পড়ুয়া ‘দুর্নীতির আশ্রয়’ নিয়েছেন। এমন অনেকেই আছেন যাঁরা কিছু বিষয়ে পাশ করতে পারেননি। কিন্তু সরকারি ওয়েবসাইটে তাঁরা যখন তাঁদের গ্রেডকার্ড আপলোড করেন, তখন দেখা গিয়েছে বহু পড়ুয়া তাঁদের পরীক্ষার নম্বর বদল করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠানো গ্রেডকার্ডের সঙ্গে সরকারি ওয়েবসাইটের গ্রেডকার্ডে অনেক পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। এই বিষয়টি সামনে আসতেই উপাচার্য কড়া পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভাস্কর বলেন, “ছাত্রছাত্রীরা এই ধরনের কাজ করতে পারে তা আমরা কল্পনাই করতে পারি না। বিকাশ ভবন থেকে বিষয়টি সামনে না এলে আমরা জানতেই পারতাম না। ওদের অনৈতিক দাবি কোনও ভাবেই মানা হবে না, যতই আমাকে ঘেরাও করা হোক।”