‘‘আপনি কি সব ছেড়েছুড়ে হিমালয়ে চলে যাচ্ছেন?’’
একমাথা ঝাঁকড়া চুল। কপালে তিলক। পরনে হালকা গেরুয়া বসন। অন্ধ্রপ্রদেশে এনডিএ-র শরিক দল জনসেনা পার্টির নেতা তথা সে রাজ্যের মন্ত্রী পবন কল্যাণকে আজ এমন বেশে দেখে হাসতে হাসতে প্রশ্নটা ছুড়ে দেন নরেন্দ্র মোদী। পবন বলেন, ‘‘অনেক কাজ বাকি। হিমালয় আপাতত অপেক্ষা করুক।’’ আজ পবনের মতো দিল্লির বিজেপি সরকারের শপথগ্রহণের মঞ্চে হাজির শিবসেনার একনাথ শিন্দে, টিডিপি-র চন্দ্রবাবু নায়ডুর মতো এনডিএ-র অন্য শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও আলাদা করে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। পরে এনডিএ-র বৈঠকে বিহার, অসম ও পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে একযোগে ঝাঁপানোর লক্ষ্য স্থির করে দেন তিনি। সূত্রের মতে, ওড়িশা, দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গে সরকার গড়াটা বিজেপির সম্মানের লড়াই। প্রথম দু’টি লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। এ বার বিজেপি সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যের বিধানসভা ভোটে।
আগের দু’টি লোকসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া মোদী সরকার তৃতীয় দফায় শরিক-নির্ভর হয়ে কত দিন টিকবে, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। কিন্তু ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা এবং দিল্লিতে বিজেপির অনায়াস ক্ষমতাদখল সেই ভাষ্যকে অনেকাংশে পাল্টে দিয়েছে। রাজনীতিকদের মতে, গত ছ’মাসে ধারাবাহিক ভাবে বিধানসভাগুলিতে জিতে মোদীরা এখন অনেক বেশি শক্তিশালী। কিন্তু শরিকদের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার প্রশ্নে আগের চেয়ে অনেক নমনীয় হয়ে, পরিস্থিতি মেপে পা ফেলছে বিজেপি।
আজ তাই দিল্লির শপথগ্রহণের মঞ্চে এনডিএ-র শক্তি প্রদর্শনের পরে রাজধানীতে উপস্থিত বিজেপির সব মুখ্যমন্ত্রী ও শরিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। রাজধানীর একটি হোটেলে হওয়া এনডিএ-র ওই বৈঠকে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীও। সূত্রের মতে, চলতি বছরে বিহার এবং আগামী বছরে অসম ও পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হয় বৈঠকে। তিন রাজ্যেই জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপানোর জন্য এনডিএ নেতৃত্বকে এখন থেকে প্রস্তুত হতে বলেন মোদী। বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিনোদ তাউড়ে বলেন, ‘‘অন্য রাজ্যগুলির মতোই পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও বিহারে এনডিএ একজোট হয়ে লড়বে। বৈঠকে উপস্থিত সব দল প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছে।’’ শরিক নেতাদের মধ্যে নীতীশ কুমার আজ ছিলেন না দিল্লিতে। নিজেদের রাজ্যে বাজেট অধিবেশন চলায় বিজেপির দুই মুখ্যমন্ত্রী, উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ এবং গুজরাতের ভূপেন্দ্র পটেল আসতে পারেননি।