সময়মতো তেজস যুদ্ধবিমান সরবরাহ করতে না পারায় আবার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘হিন্দুস্থান অ্যারোনটিকস লিমিটেড’(হ্যাল)-কে নিশানা করলেন ভারতীয় বায়ুসেনার প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিংহ। মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুর ইয়ালেহাঙ্কা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে ‘অ্যারো ইন্ডিয়া ২০২৫’-এ যোগ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই মূহূর্তে হ্যালের উপর আমাদের আস্থা নেই।’’
ঘটনাচক্রে, বেঙ্গালুরুরই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যাল এখনও ভারতীয় বায়ুসেনাকে পূর্বনির্ধারিত সময়সীমা মেনে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ৪০টি তেজস যুদ্ধবিমান সরবরাহ করতে না পারায় এই ক্ষোভ উগর দেন এয়ার চিফ মার্শাল সিংহ। ঘটনাচক্রে, গত মাসে ভারতীয় বায়ুসেনার আধুনিকীকরণ এবং আত্মনির্ভরতা শীর্ষক এক আলোচনাসভায় তিনি জানিয়েছিলেন, বেশ কয়েক বছর আগে বরাত দেওয়া হলেও এখনও হ্যাল তেজস মার্ক-টু যুদ্ধবিমান দেয়নি বায়ুসেনাকে।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হালকা ওজনের, ‘মাল্টি রোল সুপারসনিক’ যুদ্ধবিমান তেজস নানা ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে সক্ষম। এর ৬৫ শতাংশেরও বেশি যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জাম ভারতীয় সংস্থাগুলি তৈরি। চিনের জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানের তুলনায় তেজসের নয়া সংস্করণ প্রযুক্তিগত উৎকর্ষে এগিয়ে বলে একাধিক আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বিষয়ক রিপোর্টে জানানো হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে হ্যালকে ৪০টি তেজস মার্ক-১ বরাত দিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। পরে ৮৩টি তেজস কেনার জন্য হ্যালকে বরাত দেওয়া হয়েছে।
২০২৩ সলের অক্টোবরে তেজসের মার্ক-১ ফাইটার জেটের দু’আসন বিশিষ্ট নয়া প্রশিক্ষণ সংস্করণটি আনুষ্ঠানিক ভাবে তুলে দেওয়া হয়েছিল বায়ুসেনার হাতে। কিন্তু প্রথম বরাতের ৪০টি যুদ্ধবিমানের সব ক’টি এখনও পাওয়া যায়নি। পাঁচ দশকের পুরনো রুশ মিগ-২১-এর বদলে আগামী পাঁচ বছরে ১০০-রও বেশি তেজস চায় বায়ুসেনা। এর নতুন সংস্করণ তেজস মার্ক-২-কে ‘অ্যাক্টিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যান্ড অ্যারো রেডার’ (এএসইএ), মিড এয়ার ফুয়েলিং এবং ‘অস্ত্র’ ক্ষেপণাস্ত্রে সজ্জিত করার কাজও সম্পূর্ণ করে ফেলেছে হ্যাল। কিন্তু এখনও হয়নি বরাত অনুযায়ী যুদ্ধবিমান সরবরাহ। যদিও এর মধ্যে তেজসের নৌ সংস্করণের জন্য হ্যালের সঙ্গে চুক্তি করেছে ভারতীয় নৌসেনা। ইতিমধ্যেই ভারতীয় নৌবাহিনীর বিমানবাহী জাহাজ আইএনএস বিক্রমাদিত্যে সফল উড়ান এবং অবতরণ পরীক্ষাও হয়েছে তেজসের।