৭০ ঘণ্টা কাজের নিদান নারায়ণমূর্তির, সেই ইনফোসিসে শৃঙ্খলহীন দাসত্ব করেন কর্মীরা!

শৃঙ্খলহীন দাসত্ব। শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিসের প্রাক্তন কর্মী এভাবেই বর্ণনা করলেন সেখানকার কাজের পরিবেশকে। সেই সঙ্গে তাঁর আরও দাবি, প্রায় ৯ বছর সেখানে চাকরি করার সময় অকথ্য পরিশ্রম করলেও বিনিময়ে পেয়েছেন যৎসামান্য বেতন। অন্যান্য সংস্থার তুলনায় তা সত্যিই অনেক কম বলে দাবি তাঁর। এক সোশাল মিডিয়ায় নিজের নাম গোপন করে এই ‘বোমা’ ফাটিয়েছেন তিনি। যাকে কেন্দ্র করে ফের নেট ভুবনে চর্চায় ইনফোসিস। কয়েক আগেই জানা গিয়েছিল, ২০২৩ সালের নভেম্বরের পর এখনও বেতন বাড়েনি কর্মীদের। এবার ফের শিরোনামে সংস্থা।

প্রাক্তন ইনফোসিস কর্তা নারায়ণমূর্তি বারংবার সাপ্তাহিক ৭০ ঘণ্টা কাজের নিদান দিয়েছেন তরুণদের। কিন্তু সেই শ্রমের প্রকৃত মূল্যায়ন কি হয় ওই সংস্থায়? প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন প্রাক্তন কর্মী। তাঁর দাবি, ২০০৮ সালে তিনি যোগ ইনফোসিসে। চাকরি ছাড়েন ২০১৭ সালে। এই ৯ বছরে তাঁর বেতন বাড়তে বাড়তে পৌঁছেছিল ৩৫ হাজার টাকায়। অথচ তিনি এখন যেখানে আছেন, সেই সংস্থায় বেতন পান ১.৭ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ আগের থেকে বেতন বেড়েছে ৪০০ শতাংশ। পাশাপাশি তাঁর আরও দাবি, ইনফোসিস থেকে চাকরি ছেড়ে অন্যত্র গেলে ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ বেতনবৃদ্ধি ঘটে। এতটাই কম বেতন ইনফোসিসে।

এছাড়াও অন্যান্য সুযোগসুবিধার ক্ষেত্রেও ইনফোসিস পিছিয়ে বলে দাবি ওই কর্মীর। তিনি লিখেছেন, তাঁকে নাকি মাসিক ৩ হাজার ২০০ টাকা দেওয়া হত যাতায়াতের খরচ হিসেবে। পার্কিংয়ের খরচ দিতে হত আলাদা করে। ক্যাফেটেরিয়াতেও ছিল বিপুল দাম। তাঁর দাবি, তিনি এখন যেখানে রয়েছেন, সেখানে ফলের জুস মেলে ১৫ থেকে ২০ টাকায়। অথচ ইনফোসিসে সেটার মূল্য ৪০ টাকা!

প্রসঙ্গত, ইনফোসিসের প্রাক্তন কর্তা নারায়ণমূর্তি নিদান দিয়েছিলেন, সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করতে হবে তরুণদের। বিতর্ক বাড়লেও নিজের বক্তব্যে অনড় ছিলেন তিনি। গত নভেম্বরে সিএনবিসি গ্লোবাল লিডারশিপ সামিটে ৭৮ বছরের নারায়ণমূর্তি বলেন, ”এই কথাটা আমি আমার কবর পর্যন্ত নিয়ে যাব।” ১৯৮৬ সালে ভারতে সাপ্তাহিক ৬ দিন কাজের নিয়ম বদলে ৫ দিন করা হয়। এই প্রসঙ্গ তুলে হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এই পরিবর্তন কোনওদিনই মানতে পারেননি তিনি। ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ”আমি অত্যন্ত দুঃখিত। আজও আমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়নি।” এবার তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ উঠল। দেখার, এর প্রতিক্রিয়ায় সংস্থার তরফে কোনও বক্তব্য রাখা হয় কিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.