বুধবার মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডিউটি ছিল গাইনো বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ডঃ দিলীপ পালের। কিন্তু ঘটনার দিন তিনি ছিলেন বালিচক এলাকার একটি নার্সিংহোমে। প্রাইভেটে অপারেশন পর্যন্ত করেছেন সেখানে। অন্যদিকে তার জায়গায় মেদিনীপুর হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করেছে জুনিয়ার ডাক্তাররা। সিআইডি বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার বিকেলে হাজির হন বালিচক এলাকার গঙ্গা নার্সিংহোমে। রেজিস্টারে দেখলেন সেদিনের উপস্থিতি। বাজেয়াপ্ত করা হলো রেজিস্টার। অন্যদিকে সাসপেন্ড হয়েছেন সেই ডাক্তার।
মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি নিয়ে বারবার প্রশ্ন ওঠে। রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে চিকিৎসকদের অনুরোধ, নির্দেশ, হুঁশিয়ারি সবই দেওয়া হয়েছে। তারপরেও কোনো কিছুই পরিবর্তন হয়নি। নিত্য দিনের অভিযোগ মত সত্যিই-ঘটনার দিনে মেদিনীপুর হাসপাতালের ডিউটি ফেলে প্রাইভেটে নার্সিংহোমে চিকিৎসা করেছেন গাইনো বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ডঃ দিলীপ পাল। তদন্তে নেমে সিআইডি সেটি জানতে পারে। তারপরেই বৃহস্পতিবার দুপুরের পর ডেবরা থানার অন্তর্গত বালিচক এলাকার সেই গঙ্গা নার্সিংহোমে হাজির হয়েছিল সিআইডি।
ওই নার্সিংহোমের মালিক বিদ্যুৎ পাল সিআইডি তদন্তের পর সংবাদ মাধ্যমের সামনে স্বীকার করেছেন যে, ঘটনার দিন ওই ডাক্তারবাবু দুটি অপারেশন করেছেন তার নার্সিংহোমে। যা রেজিস্টারে উল্লেখ করা ছিল। তাই সিআইডি সেই রেজিস্টার তুলে নিয়ে গিয়েছেন। একই রকম ভাবে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেশিরভাগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ রয়েছে। জুনিয়ার চিকিৎসকদের দিয়ে হাসপাতাল চালানোর অভিযোগ প্রকট ভাবে তদন্তকারীদের সামনে এসেছে।
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী এই কাণ্ডে থাকা ১২ জন চিকিৎসক ও জুনিয়র ডাক্তারদের সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেছেন। তারপরে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে অন্যরকম পরিস্থিতি। সাসপেন্ড হয়ে যাওয়া হাসপাতাল সুপার জয়ন্ত রাউত বিকেলের পরেই হাসপাতাল চত্বর ছেড়ে দেন। সেই সঙ্গে বাকি চিকিৎসকরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তবে জুনিয়র ডাক্তাররা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল মৌসুমী নন্দীর কাছে গিয়ে হাজির হয়েছেন। তবে এই বিষয়ে কোনো রকম মন্তব্য করতে চাননি কেউই।