উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরে পুলিশকে গুলিকাণ্ডে ক্ষুব্ধ বাহিনীর প্রধান রাজীব কুমার। হুঁশিয়ারির সুরে বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিশের ডিজি জানিয়ে দিলেন, পুলিশ ফোর্সের উপর আক্রমণ বরদাস্ত করা হবে না। কেউ একটা গুলি চালালে পুলিশ পাল্টা চারটে গুলি চালাবে। গোয়ালপোখরকাণ্ডে জখম দুই পুলিশকর্মী শিলিগুড়িতে চিকিৎসাধীন। সেখানে তাঁদের দেখতে গিয়েই এই মন্তব্য করেছেন ডিজি। সেই সঙ্গে এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত আব্দুল হোসেনের খোঁজে রায়গঞ্জ জেলা পুলিশের তরফে পুরস্কারমূল্যও ঘোষণা করা হয়েছে।
শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন গোয়ালপোখরে আক্রান্ত দুই পুলিশকর্মী। বৃহস্পতিবার তাঁদের দেখে নার্সিংহোম থেকে বেরিয়ে রাজীব বলেন, ‘‘দুষ্কৃতী গুলি চালিয়েছে আমাদের সকলের উপর। এর জবাব আমরা দেব। আমরা সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা প্রদান করি। কিন্তু পুলিশ ফোর্সের উপরে কেউ একটা গুলি চালালে আমরা চারটে গুলি চালাব। এই হামলার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’
সকালেই এই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত আব্দুলের পরিচয় এবং ছবি প্রকাশ করেছে পুলিশ। বিচারাধীন বন্দির হাতে কোর্ট চত্বরে পিস্তল তুলে দেওয়ার ঘটনা এবং তার পর বন্দির পলায়নের সঙ্গে আব্দুল জড়িত বলে তাদের অনুমান। তাঁর সন্ধান দিতে পারলে দু’লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে, ঘোষণা করেছে রায়গঞ্জ জেলা পুলিশ।
গোয়ালপোখরেরই বাসিন্দা ৩৭ বছরের আব্দুল। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার গোয়ালপোখরে দুই কর্তৃব্যরত পুলিশকর্মীর উপর হামলা চালান বিচারাধীন খুনের আসামি সাজ্জাদ আলম। পুলিশকে গুলি করে তিনি পালিয়েও যান ঘটনাস্থল থেকে। সেই ঘটনায় যোগ রয়েছে আব্দুলের। তাঁর সন্ধান জানা থাকলে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। যোগাযোগের জন্য তিনটি ফোন নম্বর দিয়েছে পুলিশ (৯১৪৭৮৮৯১৪২, ৯১৪৭৮৮৯১৪৮ এবং ৯১৪৭৮৮৯১১৪)। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার বোগরামের দফতরেও সরাসরি যোগাযোগ করা যেতে পারে।
বুধবার বিকেলে গোয়ালপোখর থানার ইকরচালা কালীবাড়ির অদূরে, ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর আক্রান্ত হন দুই পুলিশকর্মী। খুনের মামলায় বিচারাধীন বন্দি সাজ্জাদকে আদালত থেকে জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। শৌচকর্মের নাম করে পুলিশের ভ্যান থেকে নামেন অভিযুক্ত। তার পর আচমকা পিস্তল বার করে গুলি চালান। সামনে থাকা দুই পুলিশকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যান। তার পর ঘটনাস্থল থেকে মোটরবাইকে চেপে পালান সাজ্জাদ। উত্তরবঙ্গ পুলিশের তরফে পরে জানানো হয়েছে, পুলিশের কোনও পিস্তল ছিনিয়ে নেননি অভিযুক্ত। কোর্ট চত্বর থেকেই পিস্তল পেয়েছিলেন তিনি। কেউ তাঁকে সেই পিস্তল সরবরাহ করেছিলেন। অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর নীলকান্ত সরকার এবং কনস্টেবল দেবেন বৈশ্যের চিকিৎসা চলছে।
রাজীব কুমার বলেন, ‘‘দুষ্কৃতী গুলি চালিয়েছে আমাদের সকলের উপর। এর জবাব আমরা দেব। আমরা সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা প্রদান করি। কিন্তু পুলিশ ফোর্সের উপরে কেউ একটা গুলি চালালে আমরা চারটে গুলি চালাব। এই হামলার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’