৭ গোলের ফাইনালে জয় ১০ জনের বার্সেলোনার, সুপার কাপের ফাইনালে ৫ গোল হজম রিয়াল মাদ্রিদের

স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালের শুরুটা যেমন হয়েছিল, তার সঙ্গে শেষের কোনও মিল রইল না। বার্সেলোনার বিরুদ্ধে ৫ গোল হজম করল রিয়াল মাদ্রিদ। ১৫তম বার সুপার কাপ জিতল বার্সেলোনা। জোড়া গোল করে ম্যাচের নায়ক রাফিনহা। নজর কাড়লেন ১৭ বছর বয়সি লামিনে ইয়ামালও।

ম্যাচ শুরুর ৫ মিনিটের মাথায় কিলিয়ান এমবাপের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সমর্থকেরা মনে করেছিলেন লা লিগায় হারের বদলা সুপার কাপে নেবে দল। মাঝ মাঠ থেকে বল পেয়ে একার কৃতিত্বে বার্সেলোনার রক্ষণভাগের ফুটবলারদের গতিতে পরাস্ত করে গোল করেন এমবাপে। কিন্তু সেই আনন্দ ১৭ মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়নি সমর্থকদের। খেলা শুরুর ৫ মিনিটের মধ্যে ১-০ গোলে এগিয়ে যাওয়া দল প্রথমার্ধ শেষ করল ১-৪ গোলে পিছিয়ে।

এমবাপের গোলের আগেও বার্সেলোনা দু’বার গোল করার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদের গোলরক্ষক থিবো কুর্তোয়া নিশ্চিত দু’টি গোল বাঁচিয়ে দেন। ২২ মিনিটের মাথায় আর পারেননি। লামিনে ইয়ামাল মাদ্রিদের তিন জন ডিফেন্ডারের মাঝখান থেকে যে জায়গা থেকে বল জালে জড়ালেন, সেখানে পৌঁছনো সম্ভব ছিল না কুর্তোয়ার। ১৪ মিনিটের মধ্যে পেনাল্টি পেয়ে যায় বার্সেলোনা। বক্সের মধ্যে গাভিকে ইচ্ছাকৃত ভাবে ফাউল করেন কামাভিঙ্গা। বল নয়, তাঁর লক্ষ্য ছিল গাভির পা। পেনাল্টি বক্সের মধ্যে ওই ভাবে ফাউল করে দলকে ডোবালেন কামাভিঙ্গা। দেখলেন হলুদ কার্ডও। পেলান্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি রবার্ট লেয়নডস্কি।

বাঁধ ভেঙে যায় রিয়াল মাদ্রিদের রক্ষণভাগে। ৩৯ মিনিটের মাথায় তৃতীয় গোল পেয়ে যায় বার্সেলোনা। জুলস কুন্দের ক্রস থেকে রাফিনহা যখন হেডে গোল করেন, তখন তাঁকে আটকানোর কথা যেন ভুলেই গিয়েছিল মাদ্রিদ। চতুর্থ গোলটি করেন আলেয়ান্দ্রো বালদে। প্রতি আক্রমণে গোলের দরজা খোলেন তিনি। প্রথমার্ধের সংযুক্তি সময় গোলটি করেন বালদে।

দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচের ফল ৫-১ হয়ে যায়। নিজের দ্বিতীয় গোল পেয়ে যান রাফিনহা। যে সময় মনে হচ্ছিল রিয়াল মাদ্রিদকে নিয়ে আবার এক বার ছেলেখেলা শুরু করেছে বার্সেলোনা, সেই সময়ই বিরাট ভুল করে বসেন গোলরক্ষক ওজসিয়েক শেজ়নি। ৫৬ মিনিটের মাথায় তিনি গোল ছেড়ে বেরিয়ে এসে বক্সের বাইরে ফাউল করেন এমবাপেকে। ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁকে মেরে লাল কার্ড দেখেন বার্সেলোনার গোলরক্ষক। তিনি মাঠ ছাড়ায় বার্সেলোনা বাধ্য হয়ে তুলে নেয় ইয়ামাল এবং গাভিকে। সেই জায়গায় নামায় গোলরক্ষক ইনাকি পেনা এবং মাঝমাঠের খেলোয়াড় দানি অলমোকে। এই জোড়া পরিবর্তন বাধ্য হয়েই করতে হয়। শেজ়নির ভুলে শুধু এক জন ফুটবলার কমে গেল তাই নয়, গোলও খেল বার্সেলোনা। বক্সের বাইরে করা সেই ফাউল থেকে ফ্রি-কিক পায় রিয়াল মাদ্রিদ। সেখান থেকে গোল করেন রদ্রিগো। তাঁর বাঁক খাওয়া ফ্রি-কিক আটকাতে পারেননি নতুন গোলরক্ষক পেনা।

৪৩ মিনিট বার্সেলোনাকে ১০ জনে খেলতে হয়। কিন্তু তাতেও রিয়াল মাদ্রিদ আর গোল করতে পারেনি। লুকা মদ্রিচকে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামিয়েছিলেন কোচ অ্যান্সেলত্তি। কিন্তু তিনিও দলকে গোলের মুখ খুলতে সাহায্য করতে পারেননি। ফলে সৌদি আরবের জেড্ডায় বার্সেলোনার বিরুদ্ধে হেরেই ফিরতে হচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.