দুয়ারে মহারণ, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ফ্ল্যাগশিপ ৫ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে চলেছে ভারত। ২২ নভেম্বর থেকে পারথে শুরু ইন্দো-অজি মহাযুদ্ধ (Border-Gavaskar Trophy)। ১৯৯১-৯২ সালের পর এই প্রথম বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে পাঁচ টেস্টের সিরিজ। অপটাস স্টেডিয়ামে মহাযুদ্ধের ১০ দিন আগেই টিম ইন্ডিয়া চলে এসেছে ক্য়াঙারুর দেশে। গত মঙ্গলবারই গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir) ও রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) টিম পেয়ে যায় বিরাট স্বস্তির খবর। জানা যায় প্রায় দীর্ঘ এক বছর পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরতে চলেছেন জাতীয় দলের মেগাস্টার মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)। বুধেই বাংলার হয়ে মাঠে নেমে পড়লেন মহাতারকা।
এদিন ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে, বাংলা-মধ্যপ্রদেশ রঞ্জি ম্যাচে শামি নামলেন। ৩৬০ দিন পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট দেখলে তাঁকে। ১৭ মাস পর ফের লাল বলের ক্রিকেট খেললেন শামি। ২০২৩ সালের জুনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল শেষ বার হাতে লাল বল তুলে নিয়েছিলেন শামি। পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপের পর এই প্রথম মাঠে নামলেন শামি। দীর্ঘদিন গোড়ালির চোটে ভোগা শামিকে গত মার্চের মাঝামঝি সময়ে বিদেশে গিয়ে অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছিল। কাজে দেয়নি ইঞ্জেকশনও। চোট-আঘাত সারিয়ে ৩৩ বছরের উত্তরপ্রদেশের ক্রিকেটার নেটে বল হাতে নেমেও পড়েছিলেন। বোলিং শুরু করে দিয়েছিলেন তারকা পেসার। কিন্তু সেরে ওঠার পরে ফের বোল্ডার চলে আসে! জানা যায় শামির চোট আবার মাথাচাড়া দিয়েছিল। তাঁর হাঁটু ফুলে যায়! শামি এবার এনসিএ-তে রিহ্য়াব শুরু করে ক্রিকেটে ফিরলেন।
শামি এদিন ১০ ওভার বল করে ৩৪ রান দিলেন। যদিও কোনও উইকেট পাননি তিনি। প্রথম বার ভাই মহম্মদ কাইফের সঙ্গে জুটি বেঁধে নতুন বলে আক্রমণ করেছেন শামি। এক বছর পর মাঠে ফিরেই যে শামি দারুণ কিছু করবেন, এমন প্রত্যাশা হয়তো কারোরই ছিল না। তবে তিনি ভালো বল করেছেন। ফর্মে ফিরেছেন। আগামিকাল শামি কেমন বল করেন সেদিকেই চোখ থাকবে অনুষ্টুপ মজুমদারদের। টস জিতে অনুষ্টুপের টিম প্রথমে ব্য়াট করার সিদ্ধান্ত নেয়। আরিয়ান পাণ্ডে ও কুলওয়ান্ত খেজোরলিয়ার জোড়া ফলায় বাংলার প্রথম ৫ উইকেট চলে গিয়েছিল মাত্র ৭৯ রানে! আরিয়ান-কুলওয়ান্ত দু’জনেই এদিন চার উইকেট করে নিয়েছেন। শাহবাজ আহমেদ (৯২) ও অনুষ্টুপ (৪৪) যদি ব্য়াট হাতে দাঁড়াতে না পারতেন, তাহলে বাংলার অবস্থা খুবই শোচনীয় হত। বাংলা শেষপর্যন্ত ২২৮ রান তুলতে সমর্থ হয়। জবাবে শুভম শর্মার মধ্যপ্রদেশ প্রথম ইনিংসে ১ উইকেটে ১০৩ রান তুলেছে। এক উইকেট কাইফের। আগামিকাল দ্রুত প্রতিপক্ষের উইকেট তোলার জন্য় শামিই হবেন অনুষ্টুপের ভরসা।
শামির জন্য রঞ্জি ট্রফি অত্য়ান্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর ইতিহাস দুর্দান্ত। ২০২৮-১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ভারতের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের নেপথ্য়ে তাঁর অবদান আজও ভক্তদের স্মৃতিতে তাজা। রঞ্জি ট্রফিতে সফল প্রত্যাবর্তন করতে পারলেই শামি উড়ে যাবেন অস্ট্রেলিয়ায়। অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম এবং দ্বিতীয় টেস্টের মাঝে ১০ দিনের ব্যবধান থাকবে। দ্বিতীয় টেস্টের আগেই শামি ঢুকে পড়তে পারেন ক্য়াঙারুর দেশে। শামির প্রত্যাবর্তন ভারতের পেস আক্রমণ ভাগে বাড়তি অক্সিজেন দেবে, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। বুমরা-সিরাজের সঙ্গে তিনি জুড়ে গেলেই খেলা ঘুরে যাবে। ফলে রঞ্জিই হতে চলেছে শামির ফেরার মঞ্চ। যেখানে প্রমাণ করতে পারলেই কেল্লাফতে।