ডিভিসি রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছেড়েছে। ম্যান মেড বন্যা। এই দাবি করে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার একেবারে হাতে নাতে প্রমাণ দিয়ে সেই দাবিকে নস্যাৎ করে দিলেন সুকান্ত মজুমদার। নবান্নের সর্তকবার্তা প্রকাশ্যে নিয়ে এসে তিনি বলেন, ডিভিসি জল ছাড়া নিয়ে আগেই আট জেলাকে সতর্ক করেছিল। রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি হবার খবর আগেই ছিল খবর ছিল নবান্নের কাছে। ১৭ সেপ্টেম্বর দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের মেমোতে আট জেলাকে সতর্ক করা হয়। অতএব ডিভিসির জল ছাড়ার বিষয়ে রাজ্য কিছু জানতো না, মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন সুকান্ত মজুমদার।
দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। এই মুহূর্তে একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি। আর এই ঘটনায় প্রথম থেকেই ডিভিসিকে নিশানা করে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লাগাতার তাঁর অভিযোগ, রাজ্যকে না জানিয়ে ডিভিসি অনিয়ন্ত্রিতভাবে জল ছেড়েছে। এই প্রসঙ্গ তুলে এবার নবান্নের সতর্কবার্তা প্রকাশ্যে এনে মুখ্যমন্ত্রীর দাবিকে নস্যাৎ করেছেন সুকান্ত মজুমদার। নবান্নের পাঠানো মেমোর ছবি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি।
একই সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে আগেই আট জেলাকে সতর্ক করেছিল। রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরির আগাম খবর ছিল নবান্নের কাছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের মেমোতে আট জেলাকে সতর্ক করা হয়। হাওড়া, হুগলি, ২ মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া পুরুলিয়ার জেলাশাসকদের কাছে মেমো পাঠানো হয়। মাইথন পাঞ্চেত জলাধারে দ্রুত জলস্তর বাড়ছে জানিয়ে ডি ভি আর আর সি ও সি ডাব্লিউ সি ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়বে জানানো হয়। এরফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে তা মোকাবিলায় যাবতীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্লাবিত হতে পারে এমন এলাকার মানুষকে প্রয়োজনে নিরাপদ আশ্রয় আনতে হবে এই নির্দেশ ছিল তাতে। এরপরই সুকান্ত মজুমদার কটাক্ষ করে বলেছেন মা, মাটি, মিথ্যে তার নাম মমতা। বঙ্গ বিজেপির সভাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নামে অপপ্রচার বন্ধ করুন। কেউ আপনাকে বিশ্বাস করে না, করবেও না।
একই সঙ্গে সুকান্ত মজুমদার রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়া নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দোষী করেছেন। বিজেপি নেতা বিস্ফোরক অভিযোগ করে বলেছেন, বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করতে জল ধারণ ক্ষমতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর আগেই জল ছেড়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের অধীনে থাকা বাঁধগুলি থেকে।
এদিকে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ডিভিসির জলে এতগুলি জেলা প্লাবিত হওয়া অসম্ভব। কিছু জেলা আছে যেগুলো দামোদর নদের অববাহিকাতে অবস্থিত নয়।পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল প্লাবিত হওয়ার সাথে ডিভিসির কোনো সম্পর্ক নেই, কারণ সেখানে বন্যা পরিস্থিতির জন্য দায়ী কংসাবতী নদী। কংসাবতীর জল ছাড়া হয়েছে মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে। রাজ্য সরকার এই জলাধার নিয়ন্ত্রণ করে। আবার বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের একাংশে বন্যা হয়েছে ময়ূরাক্ষীর জলে। ময়ূরাক্ষী নদীতে জল ছাড়া হয়েছে ম্যাসেঞ্জার জলাধার থেকে। সেই জলাধারও নিয়ন্ত্রণ করে রাজ্য সরকার। তাহলে দক্ষিণের বন্যার পরিস্থিতির জন্য কিভাবে সম্পূর্ণভাবে ডিভিসিকে দায়ী করা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ।