ওয়েনাড়ের ভূমিধসে মৃত ১৬৭, এখনও ১৯১ জন নিখোঁজ, রাতেও চলছে উদ্ধারকারী দলের কাজ

কেরলের ওয়েনাড়ে মঙ্গলবারের ভূমিধসের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ১৬৭ ছুঁল। এঁদের মধ্যে ৭৭ জন পুরুষ, ৬৭ জন মহিলা এবং ২২টি শিশু রয়েছে। নিখোঁজের সংখ্যা ১৯১। বুধবার সন্ধ্যায় ওয়েনাড় জেলা প্রশাসনের তরফে এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। নিখোঁজদের সন্ধান এবং উদ্ধারের কাজ এখনও চলছে বলে জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে।

প্রবল বৃষ্টি এবং প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার মধ্যেই সেনাবাহিনীর কর্মী, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ), কেরলের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মী, রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিষেবার কর্মী এবং স্থানীয় জনগণ উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। পাহাড়ি ওই এলাকায় ভূমিধসের কারণে হাজার হাজার টন পাথর এবং মাটির যে স্তূপ তৈরি হয়েছে, তা খুঁড়ে উদ্ধারের কাজ চালানো খুব কঠিন বলে ওয়েনাড় জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বুধবার বলেন, ‘‘ওয়েনাড়ে উদ্ধার অভিযান পুরোদমে চলছে। আমাদের রাজ্য এমন বেদনাদায়ক দৃশ্য আগে কখনও দেখেনি।’’ কেরল সরকার জানিয়েছে, মুন্ডাক্কাই, মেপ্পাড়ি এবং চুরামালা এলাকায় মৃতদের মধ্যে ৯৭ জনকে শনাক্ত করা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৭৫ জনের দেহ পরিজনেদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভূমিধসে আহত মোট ২১৯ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৭৮ জন এখনও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

শুক্রবার একটি উদ্ধারকারী দলের কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ি নদীর জলস্ফীতির কারণে আটকে পড়া কয়েক জন গ্রামবাসীকে দড়ি এবং কাঠের অস্থায়ী ভেলার সাহায্যে উদ্ধার করেন। বিজয়ন বুধবার বলেন, ‘‘দু’দিনের অভিযানে মোট ১৫৯২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকারী দলগুলি সমন্বয় রেখে অক্লান্ত ভাবে কাজ করে গিয়েছে বলেই এই সাফল্য মিলেছে।’’ তিনি জানান বিপদের আশঙ্কায় মোট ৬৭টি পরিবারের ২০৬ জনকে তিনটি আশ্রয়স্থলে পাঠানো হয়েছে।

তবে প্রকৃতির রোষে বিপর্যস্ত ওয়েনাড়ের বিপদ এখনই কাটছে না। মৌসম ভবন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ওয়েনাড় এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। সেই সঙ্গে ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে ওয়েনাড়ের উপর দিয়ে। কোথাও কোথাও সেই হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। দুর্যোগ এবং ভারী বৃষ্টির সতর্কতার কারণে কেরলের বিভিন্ন জেলায় বুধবার বন্ধ ছিল স্কুল-কলেজ। রাজ্যে দু’দিনের শোক পালনের ডাক দিয়েছে পিনারাই বিজয়নের সরকার। অন্য দিকে, ধসের কারণে রাস্তাঘাটের অবস্থা শোচনীয়। বেশির ভাগ জায়গায় রাস্তা ধসে গিয়েছে। ফলে পুলিশ-প্রশাসন, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.