ভোট মিটতেই মাওবাদী দমনে আরও কড়া কেন্দ্র। ছত্তিশগড়ের পর ঝাড়খণ্ডে মাওবাদী দমনে বড় সাফল্য যৌথবাহিনীর। সোমবার ভোরে মাওবাদী-বাহিনীর গুলির লড়াইয়ে ৫ মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ জনকে। তাদের ডেরা থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক। এদিন ওই এলাকায় মাওবাদী দমনে ঝাড়খণ্ডের বিশেষ বাহিনী
‘জাগুয়ার’কে নিয়ে একেবারে সিপিআই (মাওবাদী) শিবিরে হানা দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। যৌথবাহিনীর মুখোমুখি হয় মাওবাদী স্কোয়াডের সদস্যরা। তার পরই গুলি ছুঁড়তে থাকে। যৌথবাহিনী পালটা আঘাত করে। তাতেই মৃত্যু হয় ৫ মাওবাদীর।
ঝাড়খণ্ড (Jharkhand) পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম, পশ্চিম সিংভূম জেলার ছোটানাগরা থানার থোলকাবাদ গ্রামের কাণ্ডে হোনহাগা ওরফে গোবিন্দ নাগদুয়ার ওরফে ডিরিসুম। এই জোনাল কমিটির সদস্যের নামে ঝাড়খণ্ডের ৫ টি থানায় মোট ১৯টি মামলা রয়েছে। বাকি চারজনের নাম – সিংরাই ওরফে মনোজ কুলজাম, বাড়ি ছত্তিশগড়ের সুকনা জেলার জয়গুড় গ্রামে। তিনি সিপিআই (মাওবাদী) সাব -জোনাল সদস্য। আরও তিন স্কোয়াড সদস্য হল চাইবাসা (Chaibasa) জেলার ইচাগড়ার জঙ্গা, সূর্য ওরফে মনটা দেবগণ ওরফে মুন্ডা। তার বাড়ি চাইবাসা জেলার টোটো থানার সরজমবুরুতে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন একজন মহিলা সদস্য। তার নাম সপনি হাঁসদা। তার বাড়ি চাইবাসা জেলার ছোটনাগরা থানার হাতনাবুরুতে।
যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন সপনির স্বামী টাইগার ওরফে পান্ডু হাঁসদা। তার বাড়ি হাতনাবুরুতেই। আরেক স্কোয়াড সদস্যের নাম বটারি বানরা। সে সরজমবুরুর বাসিন্দা। এই স্কোয়াড সিপিআই (মাওবাদী) পলিটব্যুরো সদস্য মিশির বেসরার স্কোয়াড। এই মাও নেতার মাথার দাম এক কোটি টাকা। এই স্কোয়াডে ছিল রিজিওনাল সদস্য আনমল, মচু। এছাড়া চমনা কাণ্ডে ও অজয় মাহাতোর মতো স্কোয়াড সদস্যরা। চাইবাসার কোলহান রেঞ্জের গুয়া ও গেটায়া থানার লিপুঙ্গা, কুলাসাই, ঘিরঝোর, রাইকা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই সাফল্য পায় যৌথবাহিনী (Joint Force)। ওই মাও শিবির থেকে দুটি SLR, একটি ইনসাস, একটি ৩০৩ রাইফেল ছাড়াও দুটি বোল্ট অ্যাকশন রাইফেল, একটি 9MM পিস্তল, ১৩ টি ডিটোনেটর উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া নকশাল সাহিত্যের নথিপত্র, ওষুধ-সহ আরও নানা জিনিসপত্র পাওয়া গিয়েছে।
চাইবাসার পুলিশ সুপার (SP) আশুতোষ শেখর বলেন, ” পলিটব্যুরো সদস্যর নেতৃত্বে একটি দল কোলহান রেঞ্জ এলাকায় বড়সড় নাশকতার ছক কষেছিল। আমরা খবর পাওয়ার পর অভিযানে পাঁচজন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুজনকে। প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক মিলেছে।” এই কোলহান রেঞ্জ ঝাড়খণ্ডের সারান্ডার সঙ্গে যুক্ত। এখানে মাওবাদীদের বঙ্গ স্কোয়াডও রয়েছে বলে ঝাড়খণ্ড পুলিশ জানিয়েছে।
রবিবার রাতে চাইবাসা পুলিশের কাছে খবর আসে কোলহান রেঞ্জ এলাকায় ওই সদস্যের নেতৃত্বে স্কোয়াড সদস্য বড়সড় নাশকতার ছক কষেছে। তার পরেই ঝাড়খণ্ডের চাইবাসা জেলার পুলিশ ঝাড়খণ্ড জাগুয়ার, কোবরা ২০০ নম্বর ব্যাটেলিয়ান ও সিআরপিএফ (CRPF) ২৬ নম্বর ব্যাটেলিয়ান কে নিয়ে একটি টিম তৈরি করে এই সাফল্য পায়। গত ২ দিন আগে ১৫ তারিখ ছত্তিশগড়ে মাও- বাহিনীর গুলির লড়াইয়ে আটজনের মৃত্যু হয়েছিল।