‘রাজভবনের দরজা বন্ধ মুখ্যমন্ত্রীর জন্য’, বলেছেন বোস! রাজ্যপাল-সাক্ষাতের পর বেরিয়ে দাবি শুভেন্দুর

পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসায় ‘আক্রান্ত’দের জন্য রাজভবনের দরজা খোলা থাকলেও, রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর জন্য সেই দরজা বন্ধ। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এ কথাই জানিয়েছেন তাঁকে, এমনটাই দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার রাজভবনে ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন তিনি। ঘাটাল, কেশপুর লোকসভা এলাকার আক্রান্ত বাসিন্দা তথা বিজেপি নেতাকর্মীদের ১১৫ জনকে নিয়ে রাজভবন গিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ বৈঠকের পর রাজভবন থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন শুভেন্দু। সেখানেই এক প্রশ্নের উত্তরে নন্দীগ্রামের বিধায়ক দাবি করেন, ‘‘রাজ্যপাল বলেছেন এ বার তিনি পশ্চিমবঙ্গের ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের বাঁচানোর জন্য কঠিন পদক্ষেপ করবেন।’’ এরপরই শুভেন্দু আরও দাবি, ‘‘রাজ্যপাল বলেছেন রাজভবনের দরজা ভোট পরবর্তী হিংসা আক্রান্তদের জন্য সব সময় খোলা রয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রীর জন্য তা বন্ধ।’’

যদিও, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাজভবনের এক মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ করার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘আমি আর রাজভবনে যাব না। প্রয়োজন হলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলব।’’ মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পর বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছিল রাজভবন। সে ক্ষেত্রে কোনও জবাব না দিতে পারলেও, এতদিন পর ভোট পরবর্তী হিংসা আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এ কথা বলেছেন বোস। রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকে হাজির এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘রাজ্যপাল আমাদের সঙ্গে কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের পরিবেশের কথা জানতে চেয়েছিলেন। পুলিশ ও শাসকদল কী ভাবে রাতের অন্ধকারে ঢুকে বাড়ির মহিলা ও বাচ্চাদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে, তা শুনেই রাজ্যপাল আক্রান্তদের জন্য রাজভবনের দরজা খুলে দেওয়ার কথা বলেছেন। আর মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়াতেই রাজ্যপাল তাঁর জন্য রাজভবনের দরজা বন্ধ করার কথাও বলেছেন।’’

অন্য দিকে ভোট পরবর্তী হিংসায় শাসকদলকে অভিযুক্ত করে আগামী ১৯ জুন থেকে রাজভবনের সামনে ধরনায় বসতে চেয়ে কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েলকে চিঠি দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। ইমেইল মারফত পাঠানো চিঠির কোনও উত্তর এখনও আসেনি বলেই জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার আবারও পুলিশ কমিশনারকে নিজের কর্মসূচির কথা জানিয়ে অনুমতি চাইবেন বিরোধী দলনেতা। যদি কলকাতা পুলিশের তরফে অনুমতি না দেওয়া হয় তা হলে তিনি আদালতে গিয়ে ধরনার অনুমতি চাইবেন বলে জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমরা জানি রাজভবনের সামনে ১৪৪ ধারা জারি থাকে। তা সত্ত্বেও গত অক্টোবর মাসে মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো মঞ্চ বেঁধে রাজভবনের সামনে দিনের পর দিন ধরনা দিয়েছিলেন। সে ক্ষেত্রে যদি কলকাতা পুলিশ অনুমতি দিতে পারে, তা হলে আমাদের কেন ধরনা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.