রাস্তার জমা জলে স্টার্ট নিচ্ছে না বাইক, গাড়ি! শেষে ঠেলতে হবে নাকি? অন্য উপায়ও আছে

রেমালের দাপটে লন্ডভন্ড শহর। বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে জমে রয়েছে জল। অনেক জায়গায় ভেঙে পড়েছে গাছ। বহু জায়গায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত। বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রেন বাতিল হওয়ার খবরও পাওয়া যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও বহু মানুষকে বেরোতে হয়েছে রাস্তায়। যাঁরা জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের বাড়ি বসে বৃষ্টি উপভোগ করার উপায় নেই। এই দুর্যোগের দিনে গণপরিবহণের উপর ভরসা না করে যাতায়াতের জন্য নিজের গাড়িটিকেই বার করেছেন। কিন্তু রাস্তার জমা জল গাড়ির মধ্যে ঢুকে গিয়ে স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়, তখন কী করবেন? এই একই অবস্থা তো বাইক আরোহীদের ক্ষেত্রেও হতে পারে। সে ক্ষেত্রেই বা কী করণীয়?

গাড়ি বা বাইক চলতে চলতে মাঝরাস্তায় হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলে মাথায় বাজ পড়ার মতো পরিস্থিতি হয়। তাই জলমগ্ন রাস্তা দিয়ে গাড়ি না চালানোই ভাল। তবে, একান্ত যদি গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে বিপদে পড়েন, তা হলে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।

অভিজ্ঞরা বলছেন, মাঝরাস্তায় এমন অবস্থা হলে আগে গাড়ির পার্কিং বা ইন্ডিকেটর লাইট জ্বেলে গাড়িটিকে রাস্তার এক ধারে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। বাইক বা দু’চাকার গাড়ি হলে বিষয়টি সহজ। কিন্তু জলের মধ্যে চারচাকা ঠেলে রাস্তার ধারে সরানো বেশ ঝক্কির। একা তো পারবেন না। আশপাশের পথচারী কিংবা পুলিশের সাহায্য নিতে হবে।

রাস্তার জমা জল বাইকের মধ্যে ঢুকে স্টার্ট বন্ধ হয়ে গেলে বার বার সেল্‌ফ স্টার্ট দিতে যাবেন না। তাতে বিপদ আরও বেড়ে যেতে পারে। বাইক স্টার্ট দেওয়ার আরও একটি পদ্ধতি আছে। সেটি হল ‘কিক’ স্টার্ট। মাঝরাস্তা থেকে বাইক সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে কিছু ক্ষণ পর পর পা দিয়ে ‘কিক’ স্টার্ট দিয়ে দেখুন, কাজ হতে পারে।

গাড়ি চলতে চলতে হঠাৎ তা বন্ধ হয়ে গেলে অনেকেই কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রেখে আগে দেখুন আশপাশে তেমন লোকজন আছে কি না। চার-পাঁচ জনকে জোগাড় করতে পারলে আগে গাড়ির পার্কিং লাইট জ্বেলে তাকে রাস্তার এক ধারে নিরাপদ জায়গায় দাঁড় করান। এ বার খোঁজ নিন কাছাকাছি কোনও মেকানিক বা সারাইকর্মী পাওয়া যাবে কি না। কপাল ভাল থাকলে এখানেই ‘হ্যাপি এন্ডিং’ হতে পারে। কিন্তু যদি তা না হয় তা হলে কী করবেন?

বাইকে যেমন বার বার ‘কিক স্টার্ট’ দিতে বলা হল, চার চাকার ক্ষেত্রে সে উপায় নেই। চাবি ঘুরিয়েই গাড়ি স্টার্ট দিতে হবে। তবে তার আগে ইঞ্জিনটি ভাল করে পরীক্ষা করে নিতে হবে। কারণ, গাড়ির সাইলেন্সর পাইপ দিয়ে কোনও ভাবে যদি ইঞ্জিনে জল ঢুকে যায়, তা হলে গাড়ি স্টার্ট নেবে না। গাড়ির এয়ার ফিল্টার যদি ভিজে গিয়ে থাকে, তা হলে সেটি খুলে শুকিয়ে নিতে হবে। গাড়ির স্পার্ক-প্লাগটিতে জল লেগে মরচে পড়েছে কি না, তা-ও দেখে নিন। জল লেগে কিংবা আর্দ্রতার কারণে প্লাগে মরচে পড়লে গাড়ি স্টার্ট নিতে চায় না।

তবে এত ঝক্কি পোহাতে না চাইলে আগে থেকে মোবাইলে গাড়ি বা বাইক সংস্থার বিশ্বস্ত কিছু ‘মোবাইল’ বা ভ্রাম্যমাণ সারাইকর্মীর ফোন নম্বর সেভ করে রাখুন। স্থানীয় ট্র্যাফিক পুলিশের সাহায্য নিয়ে ‘রিকভারি ভ্যান’ ডেকে আনতে পারেন। তারা এসে গাড়িটিকে নির্দিষ্ট সার্ভিস সেন্টারে পৌঁছে দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.