‘মোটা ভাই, ভোট নাই’, শাহ-সভার পাল্টা হিসাবে শহর জুড়ে পোস্টার-ব্যানার দিয়ে ছয়লাপ করল তৃণমূল

বুধবার কলকাতার ধর্মতলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভার আগে ভোর থেকে শহর জুড়ে পোস্টার-ব্যানারে ছয়লাপ করে দিল রাজ্যের শাসক তৃণমূল। তাদের সমাজমাধ্যম এবং আইটি সেলের উদ্যোগে শহরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় লাগানো সেই পোস্টার এবং ব্যানারগুলিতে লেখা, ‘মোটা ভাই, ভোট নাই’।

সাধারণ ভাবে বাংলায় ‘মোটা’ বলতে স্থূলাঙ্গ এবং পৃথুল চেহারার মানুষদেরই বোঝানো হয়। অমিতকে দেখে একঝলকে যা অনেকেই মনে করেন। তবে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চেহারার সঙ্গে এই সম্বোধনের কোনও সম্পর্ক নেই। শাহ জন্মসূত্রে গুজরাতি। গুজরাতে বড়ভাইকে ‘মোটা ভাই’ বলে সম্বোধন করা হয়। সেই সম্মানজনক সম্বোধনই ব্যানার-পোস্টারে করা হয়েছে। অনেকেই বলছেন, এর মধ্যে যেমন ‘দুষ্টুমি’ আছে, তেমনই ‘আইন বাঁচানো’ও রয়েছে। যা যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তার সঙ্গেই করা হয়েছে বলে বিদগ্ধজনেদের অভিমত।

বুধবার কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ‘বঞ্চিত’দের নিয়ে ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করছে বিজেপি। কিন্তু তৃণমূলের দাবি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘আসল’ উদ্দেশ্য, লোকসভা ভোটের আগে আগে রাজ্যে এসে প্রচার সেরে যাওয়া। কিন্তু যে ভোটের জন্য শাহ বাংলায় আসছেন, সেই ‘ভোট’ আর বিজেপির নেই বলেই মনে করে তৃণমূল। সেই কারণেই এই প্রচার।

তৃণমূলের আইটি সেলের এক নেতার কথায়, ‘‘ভোটের প্রচার করে মানুষের বিশ্বাস অর্জনের চেষ্টা করতে বাংলায় আসছেন ‘মোটা ভাই’ অমিত শাহ। বাংলায় আবার প্যাসেঞ্জারি শুরু করেছেন তিনি। কিন্তু যে কারণে তিনি আসছেন, সেই ভোট আর তাঁর দল বিজেপির জন্য নেই।’’ সেই বার্তা দিতেই শহর জুড়ে পোস্টার এবং ব্যানার লাগানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। শোভাবাজার, শ্যামবাজার, শিয়ালদহ, নাগেরবাজার মোড়, ফুলবাগান, কাঁকুড়গাছি মোড়, রাজারহাট, বিধাননগর স্টেশন, উল্টোডাঙা উড়ালপুল, সল্টলেক বিকাশ ভবন, করুণাময়ী সল্টলেক, হাতিবাগান, শ্যামবাজার, গিরিশ পার্ক, বিবেকানন্দ রোড-সহ উত্তর, মধ্য ও পূর্ব কলকাতার বিভিন্ন অংশ মুড়ে ফেলা হয়েছে ব্যানারগুলিতে। সমাজমাধ্যমেও বুধবার সকাল ১০টা থেকে এই সব পোস্টার এবং ব্যানার শেয়ার করা হবে বলে আইটি সেলের তরফে জানানো হয়েছে।

দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ ধর্মতলার মঞ্চে আসার কথা শাহের। তার অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যাবে বক্তৃতার পালা। রাজ্য বিজেপির যা পরিকল্পনা, সেই অনুযায়ী সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে দলের কবিয়াল-বিধায়ক অসীম সরকারের গান থেকে অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের কবিতা আবৃত্তি চলবে। এর পরে রাজ্যের নেতারা বক্তৃতা শুরু করবেন। পরে যোগ দেবেন শাহ। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভায় যোগ দিতে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধর্মতলা চত্বরে এসে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের সঙ্গে পাল্লা দিতে বিজেপির প্রস্তুতিও তুঙ্গে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.