বেহাল রাস্তার কারণে প্রাণ গেল মাত্র ১৯ বছরের এক গৃহবধূর। অসুস্থ গৃহবধূকে খাটিয়ায় শুয়ে কাঁধে করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি। শুক্রবারের মালদার বামনগোলা ব্লকের গোবিন্দপুর মহেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মালডাঙ্গা গ্রামের এই ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে রাজ্যজুড়ে।
এলাকার এক বিজেপি নেত্রী ঘটনা প্রথম সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন, তারপরে ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। এই ঘটনায় তোপ দেখেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, একের পর এক এই ধরণের ঘটনা ঘটে চলেছে। সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য পরিষেবা না পেয়ে আপনজনদের হারাচ্ছেন। তিনি রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রীকে প্রকাশ্যে ব্যর্থতা স্বীকার করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন,
“একদিকে যখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায়শই বিদেশে চিকিৎসা ভ্রমণে যান। অন্যদিকে রাজ্যের মানুষ নিজের আপনজনদের হারাচ্ছেন নূন্যতম স্বাস্থ্য পরিষেবা না পেয়ে। একের পর এক এই ঘটনা ঘটছে রাজ্যে। এবার ছিল মালদা। এবার সময় এসে গেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী সর্বসমক্ষে নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করুন।”
মালদার ওই মৃত বধূর নাম মামনি রায়, বয়স ১৯ বছর। বাড়ি মালডাঙ্গা গ্রামে। তার স্বামী কার্তিক রায় কৃষক। বৃহস্পতিবার থেকে প্রবল জ্বরে ভুগছিলেন মামনি। গতকাল দুপুরে তার শারীরিক পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ হয়ে যাওয়ায় লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু গ্রামের রাস্তা খারাপ হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স বা কোনো গাড়ি ঢুকতে চায়নি। এদিকে হাসপাতাল গ্রাম থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে । তাই তাকে খাটিয়ায় তুলে বামনগোলা গ্রামীণ হাসপাতালের দিকে রওনা দেয় পরিবারের লোকজন। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর পর মামণিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, কিছুক্ষণ আগে হাসপাতালে নিয়ে আসা গেলে হয়তো রোগীকে বাঁচানো যেত।
এই ঘটনায় স্থানীয় বিজেপির নেতৃত্ব সরব হয়েছেন। তাদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার এখন পথশ্রী করে বেড়াচ্ছে। মালডাঙ্গায় কোথায় সেই পথশ্রী? যদি সত্যিই পথশ্রীর কাজ হতো, তাহলে দুধের শিশুকে রেখে এক মা অকালে ঝরে যেতো না। যেভাবে গ্রামের মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় তা যেনো মধ্যযুগীয় ব্যবস্থাকে মনে করিয়ে দেয়। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্র থেকে রাজ্যকে যে টাকা পাঠানো হয় সেটা কী শুধুই কয়লা গরুর পিছনে চলে যাচ্ছে।
যদিও তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন এই ঘটনাকে বিক্ষিপ্ত ঘটনা বলে রাজ্যকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা বলে দাবি করেছেন।