হামাসের ‘দখলচ্যুত’ গাজ়া! ১৬ বছর পর সাফল্য, দাবি ইজ়রায়েলের, এ বার অন্য কাজে নজর নেতানিয়াহুর

গাজ়ার দখল হারিয়েছে প্যালেস্টাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস, এমনটাই দাবি করল ইজ়রায়েল। ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী যোয়াভ গ্যালান্ট জানিয়েছেন, ১৬ বছর ধরে যে হামাস গাজ়া শহর দখল করে রেখেছিল, তারা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। হামাসের ‘জঙ্গি’রা দক্ষিণ দিকে পালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ঘাঁটিও অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। ১৬ বছর পর এই কাজে সাফল্য এসেছে বলে দাবি করছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার।

ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘‘গাজ়ার দখল হারিয়ে ফেলেছে হামাস। দক্ষিণ দিকে জঙ্গিরা পালাচ্ছে। সাধারণ মানুষ তাঁদের ঘাঁটিতে ঢুকে পড়ছেন।’’ তবে এই বক্তব্যের সপক্ষে কোনও ভিডিয়ো প্রমাণ স্বরূপ দেখাতে পারেননি গ্যালান্ট। তাঁর দাবি, গাজ়া শহরের বাসিন্দারা তাঁদের সরকারের উপর থেকে আস্থা হারিয়েছেন।

হামাস গাজ়ার ‘দখলচ্যুত’ হওয়ায় এ বার ইজ়রায়েলের একটাই কাজ বাকি পড়ে রয়েছে। তা হল, হামাসের হাত থেকে তাঁদের পণবন্দি নাগরিকদের ছাড়িয়ে আনা। সেই কাজেই মনোনিবেশ করেছে নেতানিয়াহুর সেনা। কী ভাবে পণবন্দিদের দ্রুত মুক্ত করা যায়, তার চিন্তাভাবনা চলছে।

ইজ়রায়েল এবং হামাসের মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করছে নিরপেক্ষ রাষ্ট্র কাতার। কাতারের প্রতিনিধির মাধ্যমে একে অপরকে বার্তা দিচ্ছে যুদ্ধরত দুই পক্ষ। গ্যালান্টের বক্তব্য শুনে হামাসের দাবি, ইজ়রায়েল সেই মধ্যস্থতাকারীর বার্তায় মন দিক। হামাসের তরফে মুখপাত্র আবু ওবেদিয়া বলেছেন, ‘‘আমরা মধ্যস্থতাকারীকে জানিয়েছি যে, পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতি পেলে আমরা কিছু পণবন্দিকে মুক্তি দিতে রাজি। ওই পাঁচ দিনে আমরা আহতদের চিকিৎসা করব এবং ত্রাণ বিতরণ করব। কিন্তু শত্রুপক্ষ গড়িমসি করছে।’’

পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতির পরিবর্তে ৭০ জন পণবন্দিকে ছাড়তে রাজি হয়েছে হামাস। তবে দর কষাকষি চলছে। ইজ়রায়েল ১০০ জনের মুক্তির দাবি জানিয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে হামাসের তরফে আবার জানানো হয়েছে, ১০০ জনকে মুক্তি দিলে ইজ়রায়েলের জেলে বন্দি ২০০ প্যালেস্টিনীয় শিশু এবং ৭৫ মহিলাকে মুক্তি দিতে হবে।

গত ৭ অক্টোবর হামাস বাহিনী ইজ়রায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালায় এবং বহু নাগরিককে পণবন্দি করে নিয়ে যায়। পণবন্দির সংখ্যা ২০০-র বেশি। তার পর থেকেই যুদ্ধ শুরু হয়েছে পশ্চিম এশিয়ায়। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা সেই যুদ্ধে প্রতি দিন বহু মানুষ মারা যাচ্ছেন। শুধু গাজ়াতেই মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। ইজ়রায়েলি হামলায় মৃতদের মধ্যে রয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার শিশু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.