রেশন দুর্নীতি কাণ্ড: পুলিশের তদন্তেও মিলেছিল খাদ্য দফতরের যোগ

রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে লালুপ্রসাদ যাদবের পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির সঙ্গে যোগ পেয়েছে ইডি। ওই পশুখাদ্য মামলার রাজসাক্ষী দীপেশ ও হিতেশ চন্দকের সংস্থায় তল্লাশি চালিয়েছেন গোয়েন্দারা।

সূত্রের খবর, দু’জনের সংস্থা অঙ্কিত ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের চাল ও আটা কলে তল্লাশির অনেক আগেই চাল এবং ধান কেনাবেচায় দুর্নীতিতে কলকাতা পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেছিল। এমনকি তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি-সহ একাধিক ধারায় আদালতে চার্জশিটও জমা দিয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, ওই কেনাবেচার দুর্নীতিতে খাদ্য দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও পুলিশ সেই ভূমিকা খতিয়ে দেখেনি।

লালবাজারের একটি অংশ জানিয়েছে, এই তদন্তে সরকারি কর্মীদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছিল। তার পরেও অজ্ঞাত কারণে সেই তদন্ত এগিয়ে না নিয়ে গিয়ে শেষ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই তদন্ত করলে তখনই রেশন দুর্নীতি সামনে আসত বলে পুলিশের ওই অংশের দাবি।

লালবাজার সূত্রের খবর, ২০১৮ সালে প্রগতি ময়দান থানা এলাকার এক বাসিন্দা রেশনে নিম্ন মানের চাল দেওয়া হচ্ছে বলে ওই সংস্থার দুই ডিরেক্টর দীপেশ ও হিতেশের বিরুদ্ধে ভবানীপুর থানায় অভিযোগ জানান। প্রথমে থানার হাতে তদন্তভার থাকলেও পরে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়। এমনকি আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন ব্যয়ের মামলাও রুজু করা হয়। প্রায় সাড়ে চার বছর তদন্ত চালিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল চলতি বছরে আলিপুর আদালতে ওই দু’জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়।

সূত্রের দাবি, ওই চার্জশিটে অভিযোগ আনা হয়েছে যে, রেশনের জন্য নির্ধারিত চাল কম দামে কিনে ওই সংস্থা তা গ্রাহকদের না দিয়ে বাইরে বেশি দামে বিক্রি করে মুনাফা করেছে । ওই চাল সরকারি প্রকল্পে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অভিযুক্তেরা তা করেননি। উল্টে তাঁরা বিভিন্ন দেশ থেকে কম দামি নিম্ন মানের চাল কিনে তা সরকারি প্রকল্পে সরবরাহ করেছেন। উল্লেখ্য, এখন ইডি এই অভিযোগেরই তদন্তে নেমে মন্ত্রী-সহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।

কলকাতা পুলিশ যখন তদন্ত করেছিল, তখনও অভিযোগ ওঠে অভিযুক্তেরা বিভিন্ন ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করে ওই ধান কিনেছেন বলে। পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে দুই অভিযুক্তের সঙ্গে খাদ্য দফতরের বেশ কিছু সরকারি কর্তার যোগসাজশ মিলেছিল। অভিযোগ, খাদ্য দফতরের বিরুদ্ধে তদন্ত এগোয়নি। উল্লেখ্য, সেই সময়ে খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন ইডি-র হাতে ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.