রংবেরঙের লাইটের দাপটেও আলোর উৎসবে বাড়ছে মাটির প্রদীপ বিক্রি

একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে বর্তমান সমাজে আলোর উৎসব মানেই বিভিন্ন ধরনের রংবেরঙের লাইট। তবে এইবারের দীপাবলিতে আলোর উৎসবে কৃত্রিম আলো নয়, বাড়ছে চিরাচরিত মাটির প্রদীপের চাহিদা। সামনেই দীপান্বিতা অমাবস্যা বা কালীপুজো। দীপাবলি মানেই আলোর উৎসব। বিগত কয়েক বছর এই আলোর উৎসবের প্রধান উৎস ছিল রংবেরঙের বাহারি লাইট। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর ব্লকের অকুলসাঁড়া গ্রাম বিখ্যাত মাটির তৈরি প্রতিমা, ঘট, হাঁড়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের প্রদীপের জন্য।

গ্রামের শিল্পী বাবলু দাস জানান, কিন্তু ধীরে ধীরে বিক্রি বাড়ছে গ্রাম বাংলার চিরাচরিত মাটির প্রদীপের। মাটির প্রদীপ তৈরি ও বিক্রি বিগত ২-৩ বছর ধরেই ক্রমবর্ধমান দাবি বিক্রেতাদের। দীপান্বিতা অমাবস্যা বা কালীপুজোয় প্রদীপ জ্বালানোর প্রচলন আজকের না, বহু প্রাচীন। কিন্তু ধীরে ধীরে দীপান্বিতা অমাবস্যা বা কালীপুজোয় প্রদীপ জ্বালানোর চল বদলে যায় রংবেরঙের নানান ইলেকট্রিক লাইটে। ঘরে ঘরে বাহারি লাইটের শোভায় প্রদীপের আলো ছিল ক্রমশ মুহ্যমান। একটা সময় দীপাবলীর সময়ে শহরের পাশাপাশি বাংলার ঘরে ঘরে বাহারি আলোর দাপটে হারিয়ে যেতে বসেছিল প্রদীপের শিখা। কিন্তু আবারও ধীরে ধীরে প্রদীপের শিখা প্রাণ ফিরে পারছে দীপাবলি উৎসবে। ফলে কুমোর পাড়ায় ব্যস্ততা মাটির প্রদীপ তৈরিতে।

পুরুষদের সঙ্গে সমানে সাহায্য করতে হয় বাড়ির মেয়েদের কেউ। বিগত তিন চার বছর মাটির প্রদীপের চাহিদা বেড়েছে কালীপুজোর সময়। সামনে কালীপুজো উপলক্ষে কুমোর পাড়ার ঘরে ঘরে মাটির প্রদীপ তৈরি করতে ব্যস্ত কুম্ভকারেরা। এই এলাকার কুম্ভকারেরা মাটির প্রদীপ তৈরি করে পাইকারি বাজারে বিক্রি করে। প্রতিবছর দুর্গাপুজো পর থেকেই মাটির প্রদীপ তৈরীর অর্ডার আসে দীপাবলি উপলক্ষে।

বিগত বছরগুলিতে উত্তরোত্তর বাড়ছে প্রদীপ তৈরীর অর্ডার। কেউ কেউ আবার অর্ডার অনুযায়ী প্রদীপ তৈরি করে দিতে পারছেন না সময়ের অভাবে। প্রদীপ মাঙ্গলিক অর্থে ব্যবহৃত হয়। পুজো পার্বণ বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তাই প্রদীপ প্রজ্জলন করা হয়। রংবেরঙের আলো যতই থাকুক মাটির প্রদীপের বিকল্প কিছু হয় না। তাই মানুষ কালীপুজোর দিন মাটির প্রদীপেই আস্থা রাখছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.