সামনে প্রায় অসম্ভব লক্ষ্য, বাবরদের বড় শটের মহড়া ইডেনে

ইডেনের মায়াবী নৈশালোকে যখন বাবর আজ়ম, শাহিন শাহ আফ্রিদিরা প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, ঠিক তখনই পাক শিবিরে পৌঁছে গেল কঠিন অঙ্কের প্রশ্নপত্র। বেঙ্গালুরুতে শ্রীলঙ্কাকে ২৩.২ ওভারে নিউ জ়িল্যান্ড হারিয়ে দিতেই বাবরদের শেষ চারে ওঠার স্বপ্ন বড় ধাক্কা খায়। অলৌকিক কোনও ঘটনা ছাড়া ইডেনে ভারত-পাক ম্যাচ হওয়া অসম্ভব।

বাবর আজ়ম সবচেয়ে ভাল করবেন, যদি হোটেলে ফিরে তিনি টস জেতা প্র্যাক্টিস করেন। একমাত্র প্রথমে ব্যাট করলেই অঙ্কের বিচারে কিছুটা হলেও টিকে থাকতে পারবে পাকিস্তান। কারণ, ইংল্যান্ডকে ২৮৭ রানে হারাতে হবে তাদের। যদি টস জিতে ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে, তা হলে আর কোনও আশাই থাকবে না মিকি আর্থারের দলের সামনে। কারণ, ইংল্যান্ড যতই রান তুলুক, তা মাত্র ২.৪ ওভারে তাড়া করতে হবে পাকিস্তানকে।

শ্রীলঙ্কাকে এ দিন ২৩.২ ওভারে হারিয়ে নেট রানরেটের দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে নিউ জ়িল্যান্ড। তাদের নেট রানরেট +০.৭৪৩। পাকিস্তানের +০.০৩৬। সম্ভাবনার মধ্যেই নেই আফগানিস্তান। ধরেই নেওয়া যায়, মুম্বইয়ে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধেই সেমিফাইনালে খেলবে ভারত।

বেঙ্গালুরুতে এ দিন সকাল থেকে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদিদের বোলিং শুরু হতেই মেঘ কেটে সোনালি রোদ উঁকি দেয় চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে। যা আঁধার নামিয়ে আনে পাক শিবিরে। প্রায় ৪৫ মিনিট দেরিতে ইডেনে অনুশীলন শুরু করেন বাবররা। ড্রেসিংরুমের টিভিতে ম্যাচ দেখছিলেন সকলে। যখন শ্রীলঙ্কার জয়ের সব আশা শেষ হয়ে যায়, তখন অনুশীলনে নামতে শুরু করেন বাবররা।

শ্রীলঙ্কার ম্যাচ শেষে পাকিস্তানের মিডিয়া ম্যানেজার বার্তা পাঠান টিম ডিরেক্টর মিকি আর্থারকে। ততক্ষণে প্রথম বার নেটে ব্যাটিং হয়ে গিয়েছিল বাবর, মহম্মদ রিজ়ওয়ান, ইফতিখার আহমেদদের। পাক শিবিরে কঠিন অঙ্কের প্রশ্নপত্র পৌঁছনোর পরেই মিকি সকলকে আরও এক বার প্যাড পরার নির্দেশ দেন। সেই মুহূর্ত থেকে দলের মেজাজ একেবারে পাল্টে যায়। বিধ্বংসী মেজাজে নেটে ব্যাট করতে শুরু করেন পাক ব্যাটসম্যানেরা। শেষ চারের আশা প্রায় শেষ হয়ে গেলেও মরিয়া চেষ্টা করার ইঙ্গিত খুঁজে পাওয়া গেল তাঁদের অনুশীলনে।

ইডেনের পিচে সবুজের আভা রয়েছে। ক্রিস ওকস, মার্ক উড, গাস অ্যাটকিনসনের গতি কি বাবররা সামলাতে পারবেন? ২০২৫-এর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করতে শেষ ম্যাচে মরিয়া থাকবেন জস বাটলার, বেন স্টোকসরাও।

ইডেনের বাইরে এ দিনই বিরাট কোহলির ৪৯তম সেঞ্চুরির সেই ছবি বড় করে টাঙানো হয়েছে। তার নীচে এসেই থামে বাবরদের টিম-বাস। এক দিকে বিরাটের উজ্জ্বল সেই মুখ আলোকিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন আলোর ছোঁয়ায়। অন্য দিকে ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কায় বিষণ্ণতা গ্রাস করছিল বাবরের মুখে।

জনপ্রিয় বাংলা ব্যান্ডের সেই গানটা মনে আছে নিশ্চয়ই? ‘‘দাদা, অঙ্ক কি কঠিন’’। ইডেনে এ দিন বাবর, রিজ়ওয়ানদের মুখগুলো যেন তারই বার্তা দিয়ে গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.