নিম্নচাপের প্রবল বৃষ্টিতে মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হল এক বৃদ্ধের। ঘটনাটি ঘটেছে জাম্বনি ব্লকের কাপগাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতিয়াশুলি গ্রামে। মৃত বৃদ্ধের নাম শ্যামাপদ নায়েক (৬০)।
দু-তিন দিন ধরে কখনো হালকা, কখনো ভারি বৃষ্টি হচ্ছে ঝাড়গ্রাম জেলাজুড়ে। শনিবার সন্ধেয় নিজের মাটির বাড়ির বারান্দায় বসে ভাত খাচ্ছিলেন শ্যামাপদ নায়ক নামের বৃদ্ধ। বাড়ির ভেতরে স্ত্রী, ছেলে, বৌমা ও নাতি-নাতনি গল্প গুজব করছিল। হঠাৎ করে বিকট শব্দ। পরিবারের লোকজন দেখে বাড়ির একটি দেওয়াল বারান্দার ভিতরে ভেঙ্গে পড়েছে। তার নিচেই চাপা হয়ে পড়ে রয়েছে বৃদ্ধ। তাকে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় ঝাড়গ্রাম গর্ভমেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কয়েক ঘন্টা পরেই মৃত্যু হয় বৃদ্ধের।
বৃদ্ধের ছেলে হাবু নায়েক বলেন, “বাবা বারান্দায় বসে ভাত খাচ্ছিল। তখন হঠাৎ করে বারান্দার একটি দেওয়াল ভেঙ্গে পড়ে এবং তার নিচে বাবা চাপা পড়ে যায়। আমরা সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে গেলে কিছুক্ষণ পরেই বাবার মৃত্যু হয়”। তিনি আরো বলেন, “আমি দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাই। আমাদের মাটির বাড়িটি অনেক পুরনো। এই ক’দিন ধরে নিম্নচাপের বৃষ্টির জন্য মাটির দেওয়ালটি ধসে পড়ল। পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাড়িতে থাকতে এখন ভয় করছে। প্রশাসন যদি একটু আমার পাশে দাঁড়ায় তাহলে আমি রক্ষা পাব”।
বিনপুর বিধানসভার বিধায়ক দেবনাথ হাঁসদা বলেন,
“বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। পরিবারের পাশে আমরা রয়েছি। সরকারি নিয়ম-নীতি মেনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে”। রবিবার দুপুরে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ মর্গে দেহ ময়নাতদন্তের পর তা পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
অপরদিকে নিম্নচাপের বৃষ্টির কারণে কংসাবতী নদীর জল বাড়ায় খালশিউলি হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর যাওয়ার বাঁশের সাঁকোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সাধারণ মানুষকে পারাপার করতে দেখা যায়। এছাড়াও ডুলুং নদীর জল বাড়ায় চিল্কিগড়ের কাছে গিধনি ও ঝাড়গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। বিনপুর দু’নম্বর ব্লকের সন্দাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চেকাপাল গ্রামে তিনটি মাটির বাড়ি ভেঙ্গে যায়। ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা কোনক্রমে প্রাণে বাঁচলেও মারা যায় দু’টি গরু।
খবর পেয়ে রবিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বিনপুর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও এবং বেলপাহাড়ি থানার আইসি। বিনপুর দু’নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি চিন্ময় মাহাতো বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে আমাদের বিডিও সাহেব ও আইসি সাহেব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা আশ্বাস দিয়েছেন পরিবারগুলিকে সমস্ত দিক থেকে সাহায্য করার জন্য”।