মেদিনীপুর কলেজের ইংরেজি বিভাগের উদ্যোগে মাইগ্রেশন নিয়ে একদিনের আন্তর্জাতিক আলোচনা চক্র

 বর্তমান পৃথিবীতে মাইগ্রেশন এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অনিবার্য ঘটনা। মানুষ স্বেচ্ছায় বা পরিস্থিতির চাপে নিরন্তর পাড়ি দিচ্ছে নিজের জায়গা ছেড়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নিজের শেকড়ের খোঁজে। কিন্তু সেই শেকড়ের প্রসারণ পূর্ব-নির্ধারিত দিকে হয় না। কোনদিকে বা কীভাবে হয় তা সমাজতাত্ত্বিকদের গবেষণার বিষয়। আর এই বিষয় নিয়েই আজ মেদিনীপুর কলেজ (স্বশাসিত) এর ইংরেজি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত হল একদিনের আন্তর্জাতিক আলোচনা চক্র।

আলোচনার শীর্ষক ছিল “নেগোশিয়েটিং লাইভস মাইগ্রেশন, ডিসপ্লেসমেন্ট, অ্যান্ড রেজিস্ট্যান্স ইন পোস্টকোলোনিয়াল নেশন-স্টেট”। আলোচনার মুখ্য বক্তা ছিলেন ইংল্যান্ডের ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, ডাঃ রেশমী ভার্মা। নিজের বক্তব্যে অধ্যাপক ভার্মা বর্তমান সময়ে পুঁজিবাদী শক্তির হাতে প্রাকৃতিক সম্পদের অনিয়ন্ত্রিত নিষ্কাশন কীভাবে বিভিন্ন জনজাতির মানুষের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে ও তাদের নিজেদের পরিচিত পরিসর ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি দিতে বাধ্য করে তার কথা বলেন। বলেন সাহিত্যে এই বাধ্যতামূলক মাইগ্রেশনের ছবি উঠে আসার কথা। আলোচনা চক্রের অপর মুখ্যবক্তা, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের প্রফেসর ডাঃ সুবীর সিনহা নিজের বক্তব্যে তুলে ধরেন প্রাকৃতিক সম্পদের বিপজ্জনক নিষ্কাশন ও তৎসংক্রান্ত রাজনীতির কথা। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের প্রাক্তন অধ্যাপক ডাঃ হিমাদ্রী লাহিড়ির বক্তব্যে উঠে আসে ডায়াস্পোরিক জনগোষ্ঠী, সতত সঞ্চারমান মানুষদের কথা। বক্তাদের আলোচনায় বারবার ফিরে আসে নেশন-স্টেটের প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্ন করার প্রয়োজনীয়তার প্রসঙ্গ।

একদিনের এই আলোচনাচক্রে অংশ নেন ভারতের একাধিক রাজ্য থেকে আসা অনধিক ষাটজন অধ্যাপক এবং গবেষক। নিজের প্রারম্ভিক বক্তব্যে মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ গোপাল চন্দ্র বেরা উপস্থিত শ্রোতামন্ডলীর সামনে কলেজের নানান গৌরবময় দিকের কথা তুলে ধরেন। এমন জরুরি বিষয়ের ওপর আলোচনা চক্রের আয়োজন করার জন্য অধ্যক্ষ ইংরেজি বিভাগকে ধন্যবাদ জানান। আলোচনা চক্রে অংশ নেয় ইংরেজি বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা। তাদের উজ্জ্বল মুখ জানান দিচ্ছিল ভাবনার নতুন দিকের সন্ধান পাওয়ায় তাদের মানসিক সমৃদ্ধির কথা। আর ভাবনার এহেন নতুন দিকের সন্ধানই হয়তো এই তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করবে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ছুটে চলা এই পৃথিবীকে সঠিক দিশা দেখাতে।        

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.