হনুমানের মুখের ভাষা এই? হিন্দুদের আবেগে ঘা! মুক্তির পর আইনি সমস্যায় ‘আদিপুরুষ’

মুক্তির আগে যে বিতর্ক জারি ছিল ‘আদিপুরুষ’ দেখার পর তাতেই আবার ঘি পড়ল। ওম রাউত পরিচালিত রামায়ণ-আশ্রিত এই ছবির বিরুদ্ধে দিল্লির হাইকোর্টে পিটিশন দায়ের করল হিন্দু সেনার দল। সেই আবেদনে জনসমক্ষে এই ছবির প্রদর্শন বন্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে। হিন্দু সেনার জাতীয় সভাপতি বিষ্ণু গুপ্তর মতে, ‘আদিপুরুষ’-এ পৌরাণিক হিন্দু চরিত্র রাম, রাবণ, সীতা এবং হনুমানের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হয়েছে। তাই অবিলম্বে কিছু ‘আপত্তিকর’ দৃশ্য ওই ছবি থেকে বাদ দিতে হবে।

পিটিশনে আরও বলা আছে, “এই ছবিতে ধর্মীয় চরিত্রদের যে ভাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে তা অসঙ্গত। বাল্মীকির রামায়ণে যা ছিল তার সম্পূর্ণ বিপরীত। এতে হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসুক এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হোক।”

মুক্তির আগেও ‘আদিপুরুষ’-এর ঝলক দেখে তথ্যবিকৃতির অভিযোগ তুলেছিলেন বিজেপি নেতারা। যদিও সেন্সর বোর্ডে হেসেখেলেই পাশ করে যায় প্রভাস, কৃতি স্যানন এবং সইফ আলি খান অভিনীত ‘আদিপুরুষ’। গত ১৬ জুন দেশ জুড়ে বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। তার পর থেকে আবার সমালোচক, নিন্দকের চর্চার কেন্দ্রে এই ছবি। চরিত্রদের চেহারা নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। রাবণের ভূমিকায় সইফের সাজ মানাচ্ছে না থেকে শুরু করে প্রভাসের চেহারা রাম নয়, কর্ণের মতো— এ সব কিছুই আলোচনায় উঠে এসেছে। কিন্তু ছবি মুক্তির পর নতুন করে টিপ্পনী কাটলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা রামানন্দ সাগরের পুত্র প্রেম সাগর। তাঁর মতে, “ওম রাউত ‘আদিপুরুষ’ দিয়ে মার্ভেল দুনিয়া গড়তে চাইছেন।”

‘আদিপুরুষ’ তিনি দেখেননি, তবে লোকমুখে শুনেছেন ‘টাপোরি’ ধাঁচের সংলাপ ব্যবহৃত হয়েছে সেখানে। হনুমানকে বলতে শোনা গিয়েছে, “তেল তেরে বাপ কা, জলেগি তেরে বাপ কি”। হেসে উঠে প্রেম জানান, তাঁর বাবাকেও দেখেছেন টেলিভিশনের জন্য জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘রামায়ণ’-এর পরিচালনা করতে। শৈল্পিক স্বাধীনতা থাকলেও তাতে তথ্য বিকৃত হতে দেখেননি কখনও।

প্রেমের দাবি, সময়ের সঙ্গে সব কিছুর ধরন বদলায়। ওম রাউত যা মনে করেছিলেন, ঠিক তা-ই করেছেন। বরং ওমের পক্ষ নিয়ে শিল্পীর স্বাধীনতার দিকটিই তুলে ধরতে চাইলেন। প্রেম মনে করিয়ে দিলেন, ‘রামায়ণ’ তো নাম রাখেননি ওম, ছবির নাম তো আলাদা। ১৯৮৭ সাল থেকে ’৮৮ অবধি বিপুল সাফল্য নিয়ে সম্প্রচারিত হয়েছিল রামানন্দ সাগরের ‘রামায়ণ’। প্রেমের কথায়, “বাবা বলে গিয়েছিলেন, আগামী ৮৫ বছরে কেউ এমন রামায়ণ বানাতে পারবে না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.