চিনের থেকে প্রায় ৮১৯২ কোটির অর্থসাহায্য পেল পাকিস্তান! ‘হাত পেতে’ অর্থনীতির হাল কি ফিরবে?

গত কয়েক মাস ধরেই অর্থকষ্টে ভুগছে পাকিস্তান। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানের ভান্ডারে বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ ক্রমশ কমছে। এক প্রকার ধুঁকছে সে দেশের অর্থনীতি। পাশাপাশি, পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে পাকিস্তানে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম। দু’বেলার খাবার জোটাতে হিমশিম খাচ্ছেন পাক নাগরিকরা। তবে সেই অবস্থা ফেরাতে চিনের কাছ থেকে ১ বিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮১৯২ কোটি) অর্থ সাহায্য নিল সে দেশের সরকার। পাক সংবাদমাধ্যম ‘এআরওয়াই নিউজ’ পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক, ‘স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তান’কে উদ্ধৃত করে এই খবর জানিয়েছে।

শুক্রবার রাতে সাংবাদিকদের কাছে একটি সংক্ষিপ্ত বার্তায় পাক কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বলেছে, ‘‘চিনের থেকে ১ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে পাকিস্তান।’’

কোন দেশের কাছে কত পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা রয়েছে, তা দেখে বোঝা যায়, সে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তানের কাছে বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ার তলানিতে ঠেকেছে। ঋণের পরিমাণ হু হু করে বাড়ছে। যার জেরে সে দেশে আর্থিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। দেশের অর্থনীতির হাল ফেরাতে অনেক দিন ধরেই আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)-এর দিকে তাকিয়ে রয়েছে পাকিস্তান। তবে আইএমএফ-এর হাত গলে সে টাকা এখনও পাকিস্তানে পৌঁছয়নি। পাকিস্তানের সম্প্রতি পেশ করা বাজেট নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল আইএমএফ। পাশাপাশি, পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অনেক দেশই অর্থ সাহায্য করতে এগিয়ে আসছে না। এই অবস্থাতেই চিনের থেকে এই অর্থ সাহায্য পাকিস্তানকে আশার আলো দেখাতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ।

পাকিস্তানের হাতে বিদেশি মুদ্রার অভাব নিয়ে কথা বলার সময় সে দেশের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার জানান, সম্প্রতি চিনের ঋণ মিটিয়েছে পাকিস্তান। তার পরই আবার নতুন করে পাকিস্তানের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে চিন সরকার।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের অর্থনীতির হাল এতটাই বেহাল যে গমের ট্রাকের পিছনে জনতার দৌড়ের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। আবার খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনারও সাক্ষী হয়েছে ভারতের পড়শি দেশ। মূল্যবৃদ্ধিতে নাকাল সকলে। নভেম্বরে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। যার পর পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতা কমতে পারে। ফলে অর্থনীতির হাল ফিরতে পারে বলে আশা করছেন সাধারণ পাক নাগরিক।

এই সঙ্কট থেকে দেশকে বাঁচাতে সম্প্রতি আরও একটি নতুন পদক্ষেপ করে শাহবাজ শরিফের সরকার। ৩ দেশের সঙ্গে বিনিময় বাণিজ্যে রাজি হয়েছে ইসলামাবাদ। সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাশিয়া, ইরান এবং আফগানিস্তান— এই ৩ দেশের সঙ্গে বিনিময় বাণিজ্য করবে পাকিস্তান। অর্থাৎ, পণ্যের বিনিময়ে পণ্য নীতিতে এখন থেকে বাণিজ্য চলবে। যেমনটা হত মুদ্রা আবিষ্কারের আগে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.