শুক্রবার সকালে প্রাতঃভ্রমণের সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। সেখানেই তিনি রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে নিজের বক্তব্য জ্জানিয়েছেন। পাশাপাশি শাসক দল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি আক্রমণ করেন তিনি।
আজ ভাঙড়ে রাজ্যপাল
দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘উনি এসেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে থাকার বার্তা দিয়েছেন। যেখানে দুর্ঘটনা বা গোলমাল, সেখানেই ছুটে গিয়েছেন। বাসন্তী গিয়ে করোমন্ডল পীড়িতদের সঙ্গে কথা বলেছেন। উনি খুব সেনসিটিভ। এটা দরকার আছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিজে দেখেন। রাজ্যের মানুষ কিরকম আছে, নিজে দেখতে যান। উনি অত্যন্ত এক্টিভ। রাজ্যের মানুষ বিপদে পড়লে অন্তত এই একটা লোককে পাশে পাবে।
কড়া বার্তা রাজ্যপালের। শয়তানের খেলা শেষ হবে। শেষের শুরু বাংলাতেই হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরাও উদ্বিগ্ন। পশ্চিমবঙ্গর ইমেজের পক্ষে এগুলো ভালো নয়। উনি বলছেন। বাকি তো কেউ বলেও না। আমরা আশা করব, তার হাত দিয়ে এগুলো সমাধান হবে’।
আইএসএফ-এর তাড়ায় পড়ে গিয়ে দুষকৃতির স্বীকারোক্তি, তাকে শওকত মোল্লা পাঠিয়েছিল
দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘তৃণমূল পার্টির তরফ থেকেই এই গোলমাল করা হচ্ছে। বিশেষত সংখ্যালঘু এলাকায় এই ধরনের গন্ডগোল বেশি। মুসলিম সমাজকে এই যুদ্ধে বোড়ে হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাদের হাতে বোমা বন্দুক তুলে দেওয়া হচ্ছে। মরছে ওরা, মারছেও ওরা। মুসলিম সমাজের নেতৃত্বে যারা আছেন, তাদের এবার ভেবে দেখা উচিৎ, সারাজীবন এভাবেই কি ওদের রাজনীতির বোড়ে করে রাখবেন? নাকি মানুষ হওয়ার সুযোগ দেবেন’।
তৃণমূল দলকে মাস পার্টি করার ডাক মমতার
তিনি বলেন, ‘মাস পার্টি হয়ে গেছে তো। চোর, ডাকাত, গুন্ডা, বদমাশ, ধর্ষক, খুনি। এরা সবাই তৃণমূলে এসে গেছে। আর কত মাস পার্টি করবেন? এবার তো পার্টি গুটিয়ে যাচ্ছে। সর্বভারতীয় থেকে লোকাল পার্টি হয়ে গেছে। এরকম মাস পার্টি করে কি লাভ যাকে দেখে মানুষ ভয় পাবে? যারা ক্ষমতায় থাকলে মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে না? এরকম মাস পার্টি রাখার দরকার কি?’
বাহিনী কোথায় প্রয়োজন? জানেন না কমিশনার
দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘রাজীবা সিনহা অযোগ্য। তাই তিনি এই পদে। তৃণমূল দল এবং সরকার যা ঠিক করে দেবে, উনি সেটাই মেনে নেবেন। উনি যদি যোগ্য হতেন, তাহলে মীরা পাণ্ডের মতো নিজেই আদালতে গিয়ে বাহিনী চাইতেন, এবং এতদিনে তাদের মোতায়েন করে দিতেন। একে আদালত রোজ ধমক দেয়। তারপরেও উনি কিছু করতে পারেন না। কারণ সেই যোগ্যতা ওনার নেই’।
মুর্শিদাবাদে সংঘর্ষ, শাসকদলের বনধ
তিনি জানিয়েছেন, ‘মুসলিম এলাকায় গন্ডগোল। কে তৃণমূল, কে কংগ্রেস বোঝা মুশকিল। আজ তৃণমূল। কাল সে কংগ্রেস। পয়সা নিয়ে মারপিট করছে। এই যে হিংসা, ভাঙড়ে দেখুন, আমাদের লোকেরা মনোনয়ন দিতে তৈরি ছিল। যেভাবে দিনের পর দিন বোমা বন্দুক চলল, আমাদের লোকেরা ভয়ে মনোনয়ন দিতেই পারল না। হয় আইএসএফ, নাহলে তৃণমূল। ব্যাপারটা এমন, যদি আইএসএফ মনোনয়ন দিতে না পারে, তাহলে কেউ পারবে না। অথচ ওখানে অনেক এরকম হিন্দু গ্রাম আছে, যেখানে কেউ মনোনয়ন দিতেই পারেনি’।
গোটা রাজ্যেই বাহিনী: আদালত
তিনি বলেন, ‘কোর্ট তার কথা বলেছে। দায়িত্ব নিতে হবে কমিশনকে। যদি না করতে পারে, তাহলে ধরে নিতে হবে এটা তৃণমূল কংগ্রেসের ইচ্ছায় হচ্ছে’।
কাল আদালতে কমিশন জানিয়েছে, মৃত্যুর কোনও খবর নেই
দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘অন্ধ পুলিস। খুন, ধর্ষণ দেখতে পায়না। মুর্খের স্বর্গে বাস করে। সাধারণ মানুষ দেখছে। মিডিয়া দেখাচ্ছে। লাইভ। রাস্তায় বডি পড়ে আছে। কাল কমপক্ষে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপর যদি পুলিস বলে কেউ মারা যায়নি, তাহলে আপনি এই পুলিস প্রশাসনের উপর ভরসা করবেন? এই রিপোর্টের ভিত্তিতে যদি নির্বাচন কমিশন কাজ করে, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?’
মনোনয়ন তুলে নিতে জেলায় জেলায় চাপ
তিনি বলেন, ‘গতবারের কথা মনে আছে। বাড়িতে সিভিক পুলিস পাঠিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারে চাপ দেওয়া হয়েছিল। যারা করেনি, তাদের ভোটের দিন ঢুকতে দেওয়া হয়নি। যারা জিতেছিল, তাদের বাংলা ছাড়া করা হয়েছিল। আমরা ২১০০ জয়ী প্রার্থীকে ভিন রাজ্যে লুকিয়ে রেখেছিলাম। পঞ্চায়েত গঠন করতে দেওয়া হয়নি। শপথ নিতে দেয়নি কেশিয়ারিতে’।