সিঙ্গুরে মমতার আশ্বাসের পরে এক মাস পার, জমি চাষযোগ্য করার কাজ এখনও থমকেই

রাজ্যজুড়ে ‘পথশ্রী-রাস্তাশ্রী’ প্রকল্পের উদ্বোধনে গত ২৮ মার্চ সিঙ্গুরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, এখানে চাষিদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া কৃষিজমির অধিকাংশ চাষযোগ্য করে দেওয়া হয়েছে। ‘সামান্য’ যে জমি চাষযোগ্য হয়নি, সেই বকেয়া কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।

সেই আশ্বাসের পরে এক মাস পেরোল। ওই কাজ শুরুই হয়নি। ফলে, মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চাষিদের দাবি, অন্তত আড়াইশো একর জমিতে এখনও চাষ করা যাচ্ছে না। জমি আগাছায় ভরে রয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘সিঙ্গুরের ওই জমি চাষের উপযুক্ত করার বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশ পেলেই কাজ শুরু হবে।’’

ওই এলাকায় জমি রয়েছে, এমন চাষিদের একাংশ জানিয়েছেন, টাটাদের মোটরগাড়ি কারখানা হওয়ার আগে সেখানে চাষের কাজে তিনটি নিকাশি নালার (তার মধ্যে একটি চাষিরাই তৈরি করেছিলেন বলে দাবি) মাধ্যমে জল ফেলা হত জুলকিয়া খালে। জমির ঢাল ওই খালের দিকেই ছিল। কিন্তু, টাটাদের প্রকল্পের কাজের জেরে ওই নিকাশি হারিয়ে ‌যায়। জমি থেকে জল বের করার উপায় থাকছে না। জমি পরিষ্কার করার কাজও হয়নি। এই অবস্থায় গোপালনগর, খাসেরভেড়ি, বাজেমিলিয়া-সহ চারটি মৌজার বিস্তীর্ণ জমি চাষযোগ্য নয়।

জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে ওই জমি চাষযোগ্য করতে প্রকল্প রচনার পাশাপাশি দরপত্র (টেন্ডার) প্রক্রিয়ার কাজ প্রাথমিক ভাবে কিছুটা এগিয়েছিল। পরে থমকে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে এখন ফের দেখা হচ্ছে, সেই সময় কতটা কাজ হয়েছিল বা এই পরিস্থিতিতে ঠিক কী করতে হবে।

সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ দুধকুমার ধাড়া বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ওই কাজ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু কারখানা তৈরির সময় বড় বড় পাইপ মাটিতে পোঁতা হয়েছিল। যন্ত্র ছাড়া, শুধু শ্রমিক দিয়ে সেগুলি মাটির নীচ থেকে তোলা সম্ভব নয়। সেই কারণেই ওই কাজ বাকি থেকে গিয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমরা ওই এলাকার চাষিদের নিয়ে প্রকল্প তৈরি করে আগেই প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছি। দিদি (মুখ্যমন্ত্রী) আশ্বস্ত করেছেন। আমাদের বিশ্বাস, ওই কাজ অবশ্যই হবে।’’

চাষিদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, গরম এখন মাঝপথে। সামনে বর্ষা। ওই কাজ দ্রুত শুরু না হলে, বর্ষায় করা অসম্ভব। তাই দ্রুত ওই জমি চাষযোগ্য করে দেওয়ার দাবি তুলেছেন তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.